সংঘাতের কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার নিজস্ব তহবিল থেকে অনুদান হিসেবে দেবে সংস্থাটি। অবশিষ্ট ৪০ কোটি ডলার কৌশলগত ঋণ হিসেবে দেবে।
কৌশলগত ঋণের অর্থ কানাডা সরকারের অনুদান থেকে পরিশোধ করা হবে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে পাবে সরকার। ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় অনুদানের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। সংস্থার ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভয়াবহ সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশু ও কিশোরদের মানসিক ক্ষতি যতটা সম্ভব কাটিয়ে তোলাই এ অনুদানের মূল উদ্দেশ্য। প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ প্রতিশ্রুতি রক্ষায় চলমান সহযোগিতার দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার অনুদান দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসন প্রকল্পের আওতায় এই অনুদানের পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে চলমান রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রজেক্ট-২ (রস্ক-২)-এর আওতা বাড়ানো হবে। প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হবে আরো দুই বছর। এ প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করতে স্থানীয় প্রায় ১৭ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ চরম উদারতার পরিচয় দিয়েছে। মিয়ানমারে ভয়ঙ্কর সহিংসতা, নির্যাতন দেখে আসা রোহিঙ্গা শিশুরা এখনো মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা ও জীবনধারণের সঠিক পথ খুঁজে না পেলে এই প্রজন্ম সময়ের অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। সুতরাং তা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যায় না।
বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, গত জুন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৮ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। এ সহায়তার অর্থ ব্যয় করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এক হাজার শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, বিদ্যমান ৫০০ কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। তা ছাড়া দুই হাজার শিক্ষক ও প্রশিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।