রাণীনগরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গাতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ

মানচিত্রে নওগাঁ

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

রাণীনগরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গাতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ

  • প্রকাশিত ৯ নভেম্বর, ২০১৮

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গানোর সময় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত মার্চ মাসে উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে বিষয়টি কিছু দিন আগে লোখ মুখে জানাজানি হয়। এ নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ সৃষ্টি হয়েছে ওই স্কুলে। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলের বাকি শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর এ বিষয়ে সুষ্ট তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাণীনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রদান করেন। 

স্কুল, স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিগুলো পুরাতন হয়ে গিয়েছিলো। প্রধান শিক্ষক দুইটা নতুন ছবি এনে পুরাতন ছবি সেখান থেকে খুলে নতুন ছবিগুলো টাঙ্গিয়ে দেন। পরে স্কুলের মো: আব্দুর রহমান পিয়নকে পুরাতন ছবিগুলো ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে টাঙ্গাতে বলেন।

পিয়ন সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে ওই ছবি টাঙ্গাতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে সেখানে ছবি ঠাঙ্গাতে দিবেনা বলে বাঁধা প্রদান করে ওই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলী। সেই দিনেই ওই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে জোর করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গিয়ে দেন।

এরপর থেকে ব্যাপক বিঃশৃংখলা সৃষ্টি হয় স্কুলে। বিষয়টি জানাজানি হলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে স্কুলের অন্যান্যে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবকসহ স্থানীয়রা। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের প্রতি অসদ আচরণসহ কারনে অকারনে বিরুদ্ধচারর করছেন এই শিক্ষকরা। এতে করে স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেছেন অবিভাবকসহ স্থানীয়রা।

শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী: হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, বিদ্যালয়ে আমার অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি পুরাতন হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর দুইটা নতুন ছবি কিনে আনি এবং আমার কক্ষের পুরতন ছবি গুলো খুলে নতুন ছবি টাঙ্গিয়ে দিই। পরে পুরাতন ছবি দুইটা আমাদের সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে টাঙ্গিয়ে দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের পিয়ন মো: আব্দুর রহমানকে দিই। পিয়ন সেখানে ছবি গুলো টাঙ্গাতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে সেখানে ছবি টাঙ্গাতে দিবেনা বলে বাঁধা সৃষ্টি করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলীসহ ৪ জন শিক্ষক। এ ছাড়াও আমার সাথে অসদ আচরণসহ কারনে অকারনে বিরুদ্ধচারন করছেন তারা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি। এ ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য ৮ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবার একটি লিখিত অভিযোগ করেছি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রদান করি।

শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন মো: আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের অনুমতিতে আমি সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দুটো টাঙ্গাতে যাই। ছবি টাঙ্গাতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম, মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান, মো: আলতাব আলী শিক্ষকরা ছবি টাঙ্গাতে দিবে না বলে বাঁধা দেয়’।

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গানোর সময় বাঁধা প্রদান করার বিষয়ে অভিযুক্ত শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলীসহ সব শিক্ষকের কাছে মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা সবাই বলেন, ‘এটা মিথ্যা। আমরা কোন বাঁধা দেইনি’।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমি লিখিত অভিযোগটি হাতে পাইনি। তবে বিষয়টি আমি মৌখিক অবিযোগ শুনেছি। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন আমি তার অনুলিপি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads