রাজস্ব বেড়েছে হুয়াওয়ের

ছবি : সংগৃহীত

তথ্যপ্রযুক্তি

রাজস্ব বেড়েছে হুয়াওয়ের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৩১ মার্চ, ২০১৯

রাজনৈতিক চাপ থাকলেও গত বছর হুয়াওয়ে টেকনোলজিস লিমিটেডের রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটি ডলার রাজস্ব আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। চীনাভিত্তিক টেলিকম সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির কনজ্যুমার ডিভাইস বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্বে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বার্ষিক আর্থিক বিবরণীতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

হুয়াওয়ের আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর তাদের মোট বিক্রি ৭২ হাজার ১২০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছেছে। ২০১৭ সালের তুলনায় নিট মুনাফা ২৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৯৩০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছেছে। ২০১৮ সালে এক বছর আগের চেয়ে দ্রুত রাজস্ব প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে নিট মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা ধীরগতি দেখা গেছে।

টেলিকম সরঞ্জামের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক চাপে রয়েছে হুয়াওয়ে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই এর নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। দেশটির দাবি, হুয়াওয়ের সরঞ্জামের মাধ্যমে মার্কিনদের তথ্য সরাসরি চীন সরকারের হাতে চলে যাচ্ছে। এসব তথ্য নজরদারির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে পঞ্চম প্রজন্মের ফাইভজি নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণে হুয়াওয়ের পণ্য বর্জন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে মিত্রদেশগুলোকে প্রতিষ্ঠানটির নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম ব্যবহারে বিরত থাকতে প্ররোচিত করছে। এরই অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের মতো গুরুত্বপূর্ণ টেলিকম বাজারে ফাইভজি অবকাঠামো নির্মাণে হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়েছে।

হুয়াওয়ে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কোনো ধরনের গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। এমনকি চীন সরকারের বিশেষ অনুরোধ এলেও তারা গ্রাহক তথ্য সরবরাহ করবে না।

রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও বৈশ্বিক হ্যান্ডসেট বাজারে ভালো পারফরম্যান্সের সুবাদে হুয়াওয়ের মুনাফা বেড়েছে। তবে গত বছর প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন বিক্রি বাড়লেও নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম বিক্রি থেকে আয় কমেছে। গত বছর এর নেটওয়ার্কিং ক্যারিয়ার ব্যবসা বিভাগের বিক্রি ২৯ হাজার ৪০০ কোটি ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৭ সালের ২৯ হাজার ৭৮০ কোটি ইউয়ানের চেয়ে কিছুটা কম।

হুয়াওয়ের কনজ্যুমার ব্যবসা বিভাগ এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বার্ষিক রাজস্বের একটি বড় অংশ বিভাগটি থেকে আসছে। গত বছর এর কনজ্যুমার ব্যবসা বিভাগের রাজস্ব এক বছর আগের চেয়ে ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৩৪ হাজার ৮৯০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছেছে। এবারই প্রথম হুয়াওয়ের রাজস্বের সিংহভাগ এসেছে কনজ্যুমার ব্যবসা বিভাগ থেকে। নেটওয়ার্কিং সরঞ্জামের নিরাপত্তা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ক্যারিয়ার ব্যবসা বিভাগের রাজস্ব কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গতকাল হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান গুও পিং জানিয়েছেন, তারা সাইবার নিরাপত্তা এবং গ্রাহক তথ্যের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি উন্নয়নে হুয়াওয়ের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে উদ্ভাবনের কোনো মাহাত্ম্য নেই। অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দেশের সরকারের একজোট হয়ে কাজ করা উচিত।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে গত কয়েক মাস হুয়াওয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। হুয়াওয়ে এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছে যে তারা কখনই গ্রাহক তথ্য পাচার করেনি, করবেও না এবং কোনো তৃতীয় পক্ষকেও তাদের সরঞ্জাম ব্যবহার করে, এমন কাজের অনুমতি দেবে না। বার্ষিক রাজস্বে যে উল্লম্ফন তা আমাদের প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ।

গুও পিং বলেন, প্রকৌশল খাতে আমরা যত বেশি বিনিয়োগ করব, প্রযুক্তিগত দিক থেকে তত বেশি এগিয়ে যাব। হুয়াওয়ে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে দ্রুতগতিতে যেকোনো ক্যারিয়ারে শক্তিশালী, সহজ ও চৌকস ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে পারে। হুয়াওয়ে ফাইভজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিতে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। আমরা জানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে উদ্ভাবন কোনো কাজে আসবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads