রপ্তানি আয়ে ফের হোঁচট

ফাইল ছবি

আমদানি-রফতানি

রপ্তানি আয়ে ফের হোঁচট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৪ নভেম্বর, ২০২০

মহামারীর ক্ষত পূরণে ঘুরে দাঁড়ানো রপ্তানি আয় আবারো হোঁচট খেয়েছে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে রপ্তানি আয় কমার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে।

অক্টোবরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, যা গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। চলতি বছরের অক্টোবরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্য বলছে, একক মাসে রপ্তানি আয় কমলেও চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা সামান্য বেড়েছে। জুলাই-অক্টোবর সময়ে সার্বিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে দশমিক ৯৮ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবরে) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ২৭৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রথম চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের বছর একই সময় রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৭২ কোটি ডলার।

দেশের রপ্তানির আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত মার্চ থেকে এ খাতের রপ্তানি কমতে শুরু করে; এপ্রিলে পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নামে। মে মাসেও তা অব্যাহত থাকে। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ধারাবাহিকতা জুলাই, আগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও অব্যাহত ছিল। তবে অক্টোবরে শেষে এ খাতের আয়ে হোঁচট খেয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ফ্রান্সে লকডাউন চলছে। এসব কারণে রপ্তানিতে ফের হোঁচট খেয়েছে।

ইপিবির তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলোদেশ আয় করেছে এক হাজার ৪৫ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতের আয়ের অঙ্ক ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।

মহামারীর সংকটের মধ্যেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর চার মাসে ৪৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার; এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলানায় ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে দশমকি ৩৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

এ সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১০ দশমকি ৬৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

জুলাই-অক্টোবরে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানি কমেছে। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১৩ শতাংশ।

মহামারীর সময়েও চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় কম ছিল ২৬ শতাংশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads