যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন আজ। গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির আগামী দুই বছরের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারিত হবে। প্রভাব পড়বে দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো কিছু না হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ও আগামী দুই বছর তার কর্মকাণ্ডে বিশেষ প্রভাব রাখতে পারে।
মধ্যবর্তী এই নির্বাচন ঘিরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের নির্বাচনী প্রচারণাও ছিল জমজমাট। প্রচারণায় এক দল আরেক দলকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছে। হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
তবে জরিপ বলছে, মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে সব মিলিয়ে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। সংখ্যালঘু ও নারী প্রার্থীদের কাঁধে জয়ের নিশান ওড়ানোর চেষ্টা করছেন ডেমোক্র্যাটরা। ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজের জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের মধ্যে ১৯৩টি ডেমোক্র্যাট এবং ২৩৫টি রিপাবলিকানদের দখলে। নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাটরা সাধারণত জেতেন এমন আসন ১৮৭টি। ডেমোক্র্যাট ভাবাপন্ন ১৫টি এবং ডেমোক্র্যাটরা জিততে পারেন এমন আসন পাঁচটি। জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩১টিতে। রিপাবলিকানরা জেতেন এমন আসন ১৫৩টি। রিপাবলিকান ভাবাপন্ন ২২ এবং রিপাবলিকানরা জিততে পারেন ২২টিতে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ছয়টিতে।
আর সিনেটে ৪৯টি ডেমোক্র্যাট এবং ৫১টি রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য সিনেটে ৫১টি এবং প্রতিনিধি পরিষদে ২১৮টি আসনে জয় পেতে হবে। সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের ২৩টি এবং রিপাবলিকানদের ৪২টিতে নির্বাচন হচ্ছে না। ৩৫টির মধ্যে ১৪টিতে ডেমোক্র্যাটরা জিতে থাকেন, পাঁচটিতে জিততে পারেন এবং ডেমোক্র্যাট ভাবাপন্ন তিনটি। রিপাবলিকানরা পাঁচটিতে জয় পেয়ে থাকেন। আর রিপাবলিকান ভাবাপন্ন মাত্র দুটি।
এছাড়া ওই জরিপ অনুসারে প্রতিনিধি পরিষদে ৫০ ভাগ নিবন্ধিত ভোটার ডেমোক্র্যাট এবং ৪৩ ভাগ ভোটার রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থন করেন। আরেকটি জরিপে ডেমোক্র্যাটদের প্রতি ৫১ ভাগ এবং রিপাবলিকানদের প্রতি ৪৪ ভাগ সমর্থন আছে। অতীতের হিসাব বলছে, স্নায়ুযুদ্ধের পর এ পর্যন্ত ৩৯টি মধ্যবর্তী নির্বাচনের ৩৬টিতেই হেরেছে ক্ষমতাসীনরা। এছাড়া প্রতি নির্বাচনে গড়ে ৩৬টি করে আসনও হারিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচনে বজায় থাকতে পারে সেই ঐতিহাসিক চিত্র। আর তেমনটা হলে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন ডেমোক্র্যাটরা।
কী হয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে?
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় প্রতি চার বছর পর পর। তবে কংগ্রেসের দুই কক্ষে (উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ) ভোট হয় প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মধ্যবর্তী সময়ে। এ সময় দুই বছর মেয়াদি প্রতিনিধি পরিষদের (৪৩৫টি) সবগুলো আসনে ভোট হয়। সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যেও ভোট হয়। তবে সিনেট সদস্যদের মেয়াদ ৬ বছর হওয়ার কারণে সেখানে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন হয়। এবার সেখানে ৩৫ আসনে ভোট হবে। এই নির্বাচনে নির্বাচিত হন অঙ্গরাজ্যের গভর্নররাও। এবার ৩৬টি রাজ্যের গভর্নর পদে নির্বাচন হবে।