এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)সংবাদদাতা:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ডাবের ভালো ফলন হওয়ায় ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন কৃষক। আর এতে ফুটে উঠেছে কৃষকের মুখে হাসি। প্রতিদিন এ উপজেলার ডাব যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা সহ চট্টগ্রাম,রাজশাহী দেশের বেশ কয়েকটি জেলায়। টাকার হিসেবে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার ডাব পাঠানো হচ্ছে এসব স্থানে।
জানা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলাতে পাঠানোর জন্য প্রতিদিন মোরেলগঞ্জের অন্তত৩০টি গ্রাম থেকে ডাব সংগ্রহ করা হয়। আর এই সংগ্রহকৃত ডাব প্রতিদিন বিকেলে ট্রাক বা বাসে করে পাঠিয়ে দেয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
ডাব বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন আমরা ডাবের সন্ধানে নসিমন নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে বেড়াই উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব ডাব সংগ্রহ করি। তারপর আড়তের মাধ্যমে বা নিজেরাই সেই ডাব ট্রাক,বাসের ছাদে করে রাজধানীতে পাঠিয়ে দেই,এই ডাব বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে। হকাররা মালিকদের কাছ থেকে প্রতি পিস ডাব ৩০-৩৫ টাকা দরে কিনে আনেন। ঢাকার বড় বড় পার্টি আমাদের প্রতি পিস ডাবের মূল্য দেওয়া হয় ৫০-৬০ টাকা করে।
মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাটের ইজারাদার শহিদুল ইসলাম বলেন ,প্রতিদিন সকালে শতাধিক ডাব হকার ছোলমবাড়িয়া ঘাট থেকে ফেরি পার হয়ে বারইখালীর পারে আসেন,আবার বিকেলে ডাবভর্তি নসিমন-করিমন বারইখালী ফেরিঘাটে লম্বা লাইন দেন পার হওয়ার জন্য।
বছরের চার মাস বাজারে ডাবের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তখন দামও ভালো পাওয়া যায়। মোরেলগঞ্জ থেকে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার ডাব ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠায়। সব খরচ বাদে প্রতি পিস ডাবে গড়ে প্রায় ১০-২০ টাকার মতো লাভ হচ্ছে।
ডাক্তার কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ডাবের পানিতে মিনারেল ওয়াটার, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা হৃৎপিন্ডের কার্যক্রম ঠিক রাখে এবং হৃৎপিন্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ডাবের ফলন ভালো হওয়ায় ও তীব্র পরিমাণ গরম পড়ায় ডাব কাটা হয়েছে বেশি। তবে ডাবের কারণে নারিকেলের ফলন কম হয়েছে। নারিকেল সমৃদ্ধ এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে চাষীরা নায্য দাম পাওয়ার পাশাপাশি বিপুল মানুষের কর্মসস্থান হবে। সে জন্য এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক কারখানা গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডাব উৎপাদনে খরচ অনেক কম। মোরেলগঞ্জে এবার ৬৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি ডাব উৎপাদন হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ৪২ কোটি টাকা। ডাব উৎপাদনে এ এলাকার অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। কর্মসংস্থানও হচ্ছে অনেকের।
তিনি আরও বলেন, ভিয়েতানামের নারিকেলের প্রতি আগ্রহের কারণে চাষীরা সে দিকে ঝুঁকছেন। বড় গাছের চেয়ে ছোট গাছের ফলনের প্রতি নজর বেশি তাদের। আমরাও চাহিদামতো সরবারহের চেষ্টা করছি। এছাড়াও নারিকেলের ছোবড়া বেশ চাহিদাসম্পন্ন। তাই গোডাউন, ফ্যাক্টরি গড়ে তোলার বিকল্প নেই।