একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতা বাছাইয়ে বাদ পড়েছে বিএনপি’র হেভিওয়েট প্রার্থীরা।আওয়ামী লীগ বিএনপি জাসদ বাসদ স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ১৮০ প্রার্থী মধ্যে প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে ৪২ জন প্রার্থীর। ঋণখেলাপি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল বকেয়া, শিক্ষাসনদসহ প্রয়োজনীয় নথি জমা না দেওয়া এবং সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়। প্রার্থীতা বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে নৌকা প্রতীকের কেউ নেই।
আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো.আব্দুল মান্নান ও জেলা প্রশাসক মো.ইলিয়াস হোসাইনের কার্যালয়ে আলাদাভাবে মনোনয়ন পত্র বাছাই করা হয়। তারা দুই জনই এবারের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগর ও আশপাশের ছয়টি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া ৭৯ প্রার্থীর মধ্যে ৫৪ জনকে বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। এসব আসনে ২২ জনকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ৩ জনের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জন্য রাখা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া ১০১ প্রার্থীর মধ্যে ৮১ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ২০ প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে,ঋণ খেলাপির অভিযোগে চট্টগ্রাম ৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম ৪ ( সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী,চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার ছেলে সামির কাদের চৌধুরীর প্রার্থীতা বাতিল হয়। একই কারণে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের এম শামসুল আলম, চট্টগ্রাম-৭ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু আহমেদ হাসনাত এবং আব্দুল আলীমের মনোনয়ন পত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এছাড়া ৩০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল বকেয়া এবং শিক্ষাসনদ জমা না দেওয়ায় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। এছাড়া দলীয় মনোনয়নের চিঠি জমা না দিয়ে মনোনয়ন ফরমে নিজেকে দলটির প্রার্থী ঘোষণা দেখানোর কারণে চট্টগ্রাম ৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী এ কে এম আবু তাহেরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী সামছুল আলম হাসেমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনকারী হিসেবে উপজেলার মোট ভোটারের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে গিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বাকের ভূঁইয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া মামলা রয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মো. নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে মীর হেলাল উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।
মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, নির্বাচনী আইন মেনে মনোনয়ন ফরমে প্রার্থীদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ মনে করেন এখানে ভুল রয়েছে তাহলে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
