মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি লাভজনক দেখতে চাই

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সাক্ষাৎকারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন

মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি লাভজনক দেখতে চাই

  • প্রকাশিত ১১ মে, ২০২১

দেলোয়ার কবীর ও টিপু সুলতান, ঝিনাইদহ 

চালু হবার পর ৫৪ বছরের ৩৮ বছরই ব্যাপক লোকসান দেওয়া ঝিনাইদহের একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রায়ত্ত মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন মিলটি লাভজনক দেখতে চান। বিগত ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমে ৯৭.২৪ কোটি টাকা লোকসানসহ পূঞ্জীভূত ৫শ ৯২ কোটি টাকা লোকসান এবং ব্যাংকের ২শ ৫৭ কোটি টাকার দেনা গুণতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলটিকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে সব কর্মকর্তা -কর্মচারী ও শ্রমিকদের রাজস্ব খাত থেকে বেতন-ভাতা প্রদানসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ উত্থাপন করেছেন তিনি।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, প্রতিকেজি চিনি উৎপাদনে ব্যাংকের সুদ বাদে ১২৩.৯৬ টাকা এবং সুদসহ ১৯৩ টাকা খরচ হলেও চিনি বিক্রি করে তিনি পান সরকার নির্ধারিত ৬০ টাকা। চিনিকলের আওতাধীন আখচাষিদের আর্থ-সামজিকভাবে সমর্থন ও মিলের সবশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার হাত বাড়ানো প্রয়োজন মনে করেন তিনি। দৃশ্যত আর্থিকভাবে লাভ না হলেও চিনিকলটি দেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি ও অন্যান্য সেক্টরের জনবলের চাহিদা মেটাতে উৎপদান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান।

মোশাররফ হোসেন মনে করেন, ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে উৎপাদনে যাওয়া মোবারকগঞ্জ চিনিকল ৫৪ বছরের মধ্যে ১৬ মৌসুমে লোকসান গুনেছে পুরনো যন্ত্রাংশ ব্যবহার, মান্ধাতা আমলের অনুন্নত জাতের আখ ব্যবহার এবং চিনিকলে ডিস্টিলারি ও হলুদ চিনি উৎপাদন না করে শুধুমাত্র সাদা চিনি উৎপাদন করার কারণে। এজন্য বাণিজ্যিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা না করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনিকলগুলোকে বিবেচনা করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, যেহেতু দেশের চিনকলগুলো গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে, সেগুলো বন্ধ না করে সব চিনিকলের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ চিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবিত উন্নতজাতের আখ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে আখ থেকে চিনি আহরণের হার বেড়ে যাবে। চিনিকলে আখ সরবরাহকারী কৃষকের আখের মূল্য সময়মতো পরিশোধ করলে কৃষকরা বেশি বেশি আখ উৎপাদন ও সরবরাহে উৎসাহিত হবেন। গত মৌসুমে আখচাষিদের পাওনা ৫০ কোটি টাকার ৪৪ কোটি তারা পাশোধ করেছেন এবং ঈদের আগেই আরও দু-কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে চিনিকলের প্রতি আখচাষিদের আস্থা বাড়বে। চিনিকলকে ক্রমাগত লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় দর-কষাকষি এজেন্সি বা সিবিএ সভাপতি ও নেতাদের সহযোগিতায় উৎপাদন বাড়ানো ও আখচাষিদের ঐক্য গড়ে তুলতে কাজ করছেন বলে জানান মোশাররফ হোসেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads