• সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ | ১৭ চৈত্র ১৪৩১ | ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬
মিথ্যা বলার পরিণাম

সত্যকে সবাই ভালোবাসে, মিথ্যাকে ঘৃণা করে

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

মিথ্যা বলার পরিণাম

  • ওমর শাহ
  • প্রকাশিত ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

সত্য আলো, মিথ্যা অন্ধকার। সত্য ন্যায়ের পথ, মিথ্যা অসৎ পথ। সত্য পুণ্যের পথ দেখায়, মিথ্যা পাপের পথে নিয়ে যায়। সত্যকে সবাই ভালোবাসে, মিথ্যাকে ঘৃণা করে। সত্যবাদী সবার প্রিয়, মিথ্যাবাদী কারো পছন্দ নয়। এমনকি মিথ্যাবাদী যদি বাস্তবেও সত্য বলে তবু মানুষ তাকে বিশ্বাস করে না। কারণ আগের মিথ্যার কারণে সে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। মিথ্যার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে বাঁচানোর মিছে চেষ্টা করে। একটি মিথ্যা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি মিথ্য বলে, তবু বাঁচতে পারে না। বরং মিথ্যার ফাঁদে আরো জড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে নিজের মিথ্যার ওপর নিজেরই আক্ষেপ হয়। কেন মিথ্যা বলতে গেলাম, সত্য বললে তো এত বিপদ হতো না।

আর যে মিথ্যাবাদী হিসেবে পরিচিতি পায়, সে দশবার কসম করে একটি সত্য কথা বললেও মানুষ ভাবে সে মিথ্যা বলছে। ফলে সে সত্য বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। হাদিস শরিফে নবী (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় সত্য পুণ্য ও নেক আমলের পথ দেখায়। আর নেক আমল জান্নাতের পথ দেখায়। আর ব্যক্তি সত্য বলতে বলতে আল্লাহর কাছে ‘সিদ্দিক’ (মহাসত্যবাদী) হিসেবে পরিগণিত হয়। আর মিথ্যা পাপের পথ দেখায়। আর পাপ পাপীকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। ব্যক্তি মিথ্যা বলতে বলতে আল্লাহর খাতায় ‘কাযযাব’ (চরম মিথ্যুক) বলে চিহ্নিত হয়ে যায় (সহিহ বুখারি, হাদিস ৬০৯৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস, ১০৩)।

মিথ্যাচার করা কবিরা গুনাহ বা মহাপাপ। মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, লা’নাতাল্লাহি ‘কাযিবীন’ মিথ্যাবাদীদের ওপর বর্ষে আল্লাহর লা’নত (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৬১)।

মিথ্যা কথা, অসত্য কথন, মিথ্যাচার, মিথ্যা আলাপ মানুষের নৈতিকতাকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে দেয়। সত্যের বিপরীতই হচ্ছে মিথ্যা। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪২)।

ইসলামে মিথ্যার কোন স্থান নেই। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) যে আচরণের জন্য সবচেয়ে রাগান্বিত হতেন তা হলো কেউ মিথ্যা বললে। যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি তওবা করত ততক্ষণ তাঁর অন্তরে তা বিঁধতে থাকত, (তিরমিজি শরিফ)।

একবার প্রিয় নবী (সা.) বললেন, হে মানুষ! মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার সমপর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হজরত রসুল (সা.) বললেন, আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বেশি মহাপাপ সম্পর্কে জানাব! সাহাবায়ে কেরাম বললেন : হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতা-মাতার নাফরমানি করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কিংবা মিথ্যাকথা বলা, (তিরমিজি শরিফ)।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads