মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় আশিক

জুনায়েদ আলম আশিক

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

ক্যারিয়ার ভাবনা

মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় আশিক

  • প্রকাশিত ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র জুনায়েদ আলম আশিক। তার মনের প্রবল ইচ্ছা মায়ের স্বপ্ন বিফল হতে দেবে না। ছোটবেলা থেকেই শুনতাম, আম্মু বলতেন আমার ছেলে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ভর্তি হয়েছি। চতুর্থ বর্ষের হাসোজ্জ্বল এই ছেলেটি ক্যাম্পাসে সারাক্ষণ আড্ডায় মেতে থাকলেও মায়ের স্বপ্নের কথা তাকে সবসময় অনুপ্রেরণা জোগায়। তার ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার ভাবনা ও সম্পর্কে জানাচ্ছেন মো. শফিকুল ইসলাম

নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে আশিক বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং আমার কাছে একটি সম্মানজনক পেশা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু আমি মায়ের স্বপ্ন নিজের মাঝে ধারণ করে বড় হয়েছি। লেখাপড়ার এই পর্যায়ে এসে একটি কথাই বলব মায়ের সিদ্ধান্তই সঠিক। মনে হয় আমি সঠিক বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছি। স্পষ্ট ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি কিন্তু এটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।

আমার বাবা বেসরকারি চাকরিজীবী। বাবাও চান বড় হয়ে আমি ইঞ্জিনিয়ার হই। আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে অনেক ভাই-বোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া শেষে সামাজিক দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অনেকে এখনো পড়াশোনা করছে। তাই আমার ছোটবেলা থেকে মায়ের কথা শুনে এবং সামাজিক দিকটি দেখে আমি মাধ্যমিক পাস করার পরেই চিন্তা করি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় নিয়ে পড়ব।

শুধু জীবনের ক্যারিয়ার নির্ধারণ করে বসে নেই আশিক। তিনি বলেন, সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে অবশ্যই সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তাই এখন থেকেই কঠিন পরিশ্রমী, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। শফিক বলেন, আমার মতে, একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বিশ্বের নতুন নতুন স্থাপনার নকশা এবং নতুন আইডিয়া সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। তাই সবসময় নিজ থেকে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কোর্সের গভীরে গিয়ে বিষয়টি বুঝতে চেষ্টা করি। আশিক এটাও মানেন, একজন আদর্শ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের পরিকল্পনা আর দশজন সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের পরিকল্পনা থেকে আলাদা হতে হবে। নকশা, ব্যবস্থাপনা, গঠন, দিকনির্দেশনা প্রধান কাজ। সর্বপ্রথম নকশা করার আগে জায়গা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। নিজের আইডিয়া অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এসব চিন্তা-ভাবনা করেই এখন থেকে নিজেকে সেভাবে তৈরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে নিজে থেকে কিছু আইডিয়া বা প্ল্যান তৈরি করে রেখেছি।

বর্তমান দৃষ্টিকোণ থেকে আমার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য হলো ভালো একটা সিজিপিএ (CGPA) নিয়ে বিএসসি পড়াশোনা শেষ করব। বুয়েট থেকে এমএসসি করার ইচ্ছাা পাশাপাশি চাকরির চেষ্টা করা। এ বিষয় নিয়ে যারা পড়তে চায়, সবাইকে স্বাগত জানাই আমি।

স্নাতক শেষ করে উচ্চশিক্ষা এমএসসি ও পিএইচডির জন্য প্রথম পছন্দ বাইরের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়। বাইরের দেশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা শেষে দেশের ভালোবাসার টানে ফিরে আসতে চাই। এই দেশ দু’হাত ভরে অনেক কিছু দিয়েছে আমাকে। আমিও দেশের জন্য কিছু অবদান রাখতে চাই। আমাদের দেশে জনসংখ্যা বেশি কিন্তু সে তুলনায় জায়গা অনেক কম। বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন আবাসন। সভ্যতার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি জনসংখ্যার চাপ ও সঠিক নগরায়ণের পরিকল্পনায় আমাদের ওপর পুরোপুরিভাবে দেশ নির্ভরশীল। তাই দেশের এসব সমস্যা মেটাতে দেশে থেকেই দেশের মানুষের সঙ্গে পথ চলতে চাই।

পড়াশোনা শেষে সরকারি চাকরি করার ইচ্ছা পোষণ করে তিনি জানান, সবাই ভালো কিছু প্রত্যাশা করে। আমার প্রত্যাশাও ব্যতিক্রম নয়। ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই সরকারি চাকরি করে থাকেন। আমিও ওই বড় শতাংশের মধ্যেই থাকতে চাই। বাংলাদেশে এই পেশার মূল্যায়ন ভালো, চাহিদাও অনেক। তাই এখন শুধুই স্বপ্ন দেখছি। সুন্দর এবং সফল হোক সবার আগামী দিনের ক্যারিয়ার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads