মাশরুম চাষ করে কোটিপতি কেরানীগঞ্জের জাহাঙ্গীর

ছবি: বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

মাশরুম চাষ করে কোটিপতি কেরানীগঞ্জের জাহাঙ্গীর

  • এরশাদ হোসেন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
  • প্রকাশিত ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

৬০ টাকার পুঁজি নিয়ে মাশারুম চাষ শুরু করে কোটিপতি হয়েছেন কেরানীগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম। তার কাছ থেকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন আরও শতাধিক মাশরুম চাষি।

কেরানীগঞ্জের উৎপাদিত মাশরুম পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি হিসেবে রাজধানীর চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে বিক্রি হচ্ছে। দেশে বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে মাশরুম। জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদন ২৫ থেকে ৩০ কেজি মাশরুম উৎপাদন করেন যা বিক্রি করে তার মাসিক আয় হয় প্রায় লাখের বেশি টাকা। এছাড়াও কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর, আব্দুল্লাহপুর ও শাক্তা এলাকার প্রয় ১৫টি স্থানে বাণিজ্যিক ভাবে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই।

মাশরুম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি সাভারের সোবাহানবাগের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৮৬ সালে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রথমে ৬০ টাকা পুজি নিয়ে কয়েকটি স্পন বা মাশরুম বীজ কিনে ছোট পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করি। লাভজনক হওয়ায় আস্তে আস্তে আমার ব্যবসা সম্প্রসারিত হতে থাকে। আমি ২০০০ সালে কেরানীগঞ্জের মধ্যেরচর এলাকায় ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে নিজে ল্যবরেটরি তৈরি করে স্পন বা মাশরুম বীজ উৎপাদন করে ব্যাপকভাবে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু মাশরুম চাষ শুরু করি। প্রথমে আমি ২০টি স্পন দিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করলেও বর্তমানে আমার এখানে ২৫ হাজার স্পন রয়েছে।

তিনি বলেন, সারা বছর মাশরুম চাষ করা যায়। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মাশরুম চাষ করতে হয়। আমার এখানে ৬ ধরনের মাশরুম চাষ হয়। এগুলো হল- ঝিনুক, ঋষি, মিল্কি, বাটন, ইনকি ও পপ। শীতের সময় ঝিনুক ও বাটন মাশরুম ভালো উৎপাদন হয়। এসব মাশরুম রাজধানীর চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও সেরাটন হোটেলসহ বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মাশরুম ব্যবসায়ীরা খামার থেকে মাশরুম কিনে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। আমার এ খামার থেকে উৎপাদিত মাশরুম বিক্রি করে মাসিক আয় হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। বর্তমানে আমার খামারের জমিরমূল্যসহ এক কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ ও বিাভন্ন ধরনের সহযোগিতা করে থাকে। আমরা এখাতে কোন ধরনে ব্যাংক ঋণ পাচ্ছি না। আমরা সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণ পেলে আরো ব্যপকভাবে মাশরুম চাষ করা সম্ভব হতো।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল আমীন বলেন, মাশরুম পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি ব্যপক জনপ্রিয় খাবার। এটি দেশের বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এবং দেশের মানুষের পুষ্টি দূর করতে সরকার আশির দশকে জাপানের সহায়তায় দেশে মাশরুম চাষ শুরু করে। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে দেশে বাড়তে থাকে মাশরুম চাষ। বিশেষ করে সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট হওয়ার পর থেকে সেখানে দেশের যুবক-যুবতীরা বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে প্রায় ১৫টি স্থানে বাণিজ্যিক ভাবে মাশরুম চাষ হচ্ছে। আমরা এদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শসহ বিভিন্নধরনের সহযোগিতা করছি। কেউ মাশরুম চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে আমরা তাদের সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো ব্যবস্থা করে দেই।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads