মরিচ বাছাই করে সংসার চালাচ্ছেন নারীরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

লকডাউনে কর্মহীন গৃহকর্তারা

মরিচ বাছাই করে সংসার চালাচ্ছেন নারীরা

  • মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল, ২০২১

করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধি-নিষেধের ফলে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না পুরুষরা। তাই সংসার চালাতে মরিচ বাছাই ও শুকানোর কাজ করছেন রাহেলা, লুৎফা, ফেরদৌসি, রুনা ও মর্জিনার মতো সংগ্রামী নারীরা। গতকাল শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার পূর্বরাখি এলাকা গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে মাথার ওপর ছাতা রেখে মরিচ শুকানো ও বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব নারীরা। ভালো ও মন্দ মরিচগুলো আলাদা করাসহ রোদে শুকানোর কাজে ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। বাজারে ভালো মরিচের দাম বরাবরই বেশি হয়ে থাকে । অন্যদিকে তুলনামূলক কম মন্দ মরিচের দাম। তাই ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মরিচ শুকানোর পাশাপাশি ভালো ও মন্দ মরিচ আলাদা করে বিক্রি করেন। এতে মরিচের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এসময় কথা হয় রাহেলা বেগমের (৪০) সাথে। তিনি জানান, ঢাকায় বাসের হেলপারের কাজ করেন তার ছেলে রুবেল। লকডাউনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ। এতে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। কিন্তু সংসারে রোজগার করার মতো উপযুক্ত আর কেউ নেই। তাই সংসারের হাল ধরতে মরিচ বাছাইয়ের কাজ করতে এসেছেন তিনি। রাহেলা বেগম বলেন, তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে আমার সংসার। স্বামী মারা গেছেন আরো পাঁচ-সাত বছর আগে। পরে আমার ছেলে ওর মামার সাথে ঢাকায় বাসের হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এতে কোনো রকম সংসার চলতে থাকে। কিন্তু সরকার আবার লকডাউন দিলে ছেলে বাসায় চলে আসে। এতে করে দু-বেলা খাবার জোটানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই খালার সাথে মরিচ বাছাই করার কাজে আসছি। একবেলা কাজ করে ৩শ টাকার মতো পাই। তা দিয়ে এখন পাঁচজনের সংসার চলছে। তিনি আরো বলেন, গতবছর সরকারসহ বিভিন্ন মানুষ ত্রাণ দিলেও এবছর ত্রাণের কোনো আলাই-বালাই নেই। এখন সব মরণ আমাদের মতো গরিবদের।

ত্রাণের কথা শুনে এগিয়ে আসেন লুৎফা বেগম, ফেরদৌসি, রুনা, মর্জিনাসহ অন্যরা। একে একে তাদের সমস্যার কথা বলেন। লুৎফা বেগম (৫০) বলেন, আমার স্বামী ভাড়ায় অটো গাড়ি চালায়। লকডাউনের সময় গাড়ি নিয়ে সিপাহিপাড়া এলাকায় গেলে পুলিশ তার গাড়ি রেখে দেয়। দুইদিন পর গাড়ির মালিক গিয়ে অটো ছাড়িয়ে আনেন। এরপর থেকে তিনি আমার স্বামীরে গাড়ি চালাতে দেয় না। বলছে লকডাউন শেষ হলে গাড়ি বের করতে দিব। এখন বুড়া স্বামী অন্যকোনো কাজও করতে পারে না। তাই দুইবেলা খাওন জোগাড় করতে মরিচ বাছাই করতে আসছি। তিনি আরো বলেন, রোদের মধ্যে মরিচ বাছাই করতে অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া মরিচের ঝাঁজে নাক দিয়ে পানি পড়তে থাকে। তারপরও নগদ টাকা পেলে ভালোই লাগে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads