সরকার

মন্ত্রিসভার শূন্যপদ পূরণ যেকোনো সময়

  • রায়হান উল্লাহ
  • প্রকাশিত ৮ নভেম্বর, ২০২০

গত দুই মেয়াদে সরকার পরিচালনায় নির্দিষ্ট সময় পর পর মন্ত্রিসভার রদবদল করে আওয়ামী লীগ। এ বছরের শুরুতেও মন্ত্রিসভায় আংশিক পরিবর্তন হয়। পরে আরো পরিবর্তনের নানামুখী গুঞ্জন শোনা গেলেও বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে তা হয়নি। তবে এবার পরিবর্তন না হলেও খালি হওয়া পদগুলো পূরণের আভাস মিলেছে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে।

করোনায় ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর থেকেই সরকারের ভেতরে মন্ত্রিসভায় রদবদলের গুঞ্জন জোরালো হয়ে ওঠে। যদিও মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র বাংলাদেশের খবরকে জানায়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী যেকোনো সময় নিয়োগ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করেছেন তিনি।

এই মন্ত্রণালয়ে এখন পর্যন্ত কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি সদা ব্যস্ত থাকায় এই মন্ত্রণালয়ে নতুন কাউকে যুক্ত করে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

একটি সূত্র বলছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ে নিয়োগের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী এ কে এম রহমতুল্লাহর নাম। ঢাকা-১০ আসনের এই এমপি ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিও। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার গুঞ্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে এ কে এম রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমি জানি না। যেদিন ফোনকল আসবে এবং আমার কাছে গাড়ি পাঠাবে, সেদিন জানতে পারব আমি মন্ত্রী। এ ছাড়া জানার কোনো সুযোগ নেই।’

এ ছাড়া ১৪ দলের শরিক দলের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্ভাবনা বেশি। চলতি সংসদে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এ পর্যন্ত চারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কোনো মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তনের আভাস আছে। যদিও এবার রদবদল হবে না; শূন্যস্থান পূরণ হতে পারে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রিসভায় রদবদল বা নিয়োগ দেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না সেটিও আমার জানা নেই। একই কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে দলীয় প্রধান কিছু বলেছেন বলে শুনিনি। তবে শূন্য হওয়া স্থান পূরণ হতে পারে। সবকিছুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। তিনি প্রয়োজন অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেবেন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৭ ফেব্রুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। এরপর ২০১৯ সালের ১২ জুলাই স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইমরান আহমদকে প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরাকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর দায়িত্ব পরিবর্তন করা হয়। ওই সময় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads