মহানগর

ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে মারধর

  • তুরাগ (উত্তরা)প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ অগাস্ট, ২০২১

রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের বাসা বাড়িতে অনুমোদনহীন 'এইচ এস ডিস্ট্রিবিউশন' নামের একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কারখানায় র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে আধুনিক মেডিকেল হাসপাতালের মো. জহির (৩২) নামের এক কর্মচারীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। সে সাথে ওই সিন্ডিকেটের লোকজন অভিযুক্ত কর্মচারীর শরীরের রক্ত বিক্রি করে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতকে দেয়া পাঁচ লাখ জরিমানার টাকা তোলার হুমকি দিয়েছে ।

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‌‌,৭ম তলায় বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই কর্মচারী একই হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসাবে কাজ করে।
এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী উত্তরা পশ্চিম থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি-১০৮৪) করেছে।

ভুক্তভোগী জহিরুল ইসলাম বলেন, 'সুজনের এইচ এস ডিস্ট্রিবিউশনের, মাধ্যমে নিন্মমানের হাসপাতালের চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ দিত। ঐ কারখানায় র‍্যাবের ১ অভিযান পরিচালনাক করে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করে। এ ঘটনার পর টিভি নিউজ এর লাইভ প্রোগ্রামে আমার ছবি দেখে তারা আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়।

তিনি বলেন, ওই সমিতির লোক আমাকে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সাত তলায় ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে মিজান আমাকে ধরে প্রথমে লাথি মারে। সাথে থাকা  মিন্টু সরকার, রবিউল ইসলাম, মেহেদী, জাহিদসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন আমাকে রড দিয়ে পিটায় আর বলে- র‍্যাবের অভিযানে তোরা ছিলি কেন? তোর জন্যই ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

আহত জহির বলেন, 'মারধরের এক পর্যায়ে তারা বলে- এখন তোর শরীরের রক্ত বিক্রি করে জরিমানার ৫ লাখ টাকা আদায় করবো। সেই সাথে তারা আমার শরীরে খালি সিরিজ দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। মারধরের সময় অধ্যক্ষ ডাঃ সাব্বিরও উপস্থিত ছিলেন।

'এক পর্যায়ে আমি কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে টঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। সেই সাথে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করি। জিডি করার পরও কোন পুলিশ পাইনি। অথচ উল্টো উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই রুবেল সমিতির সভাপতি নজরুলের কথা শুনে আমাকে ধরার জন্য খুঁজে বেরাচ্ছে। সেই সাথে আমার বাসায় গিয়ে হুমকিধামকিও দিয়ে আসছে' বললেন ভুক্তভোগী জহির।

এ বিষয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরের প্রতিবেদককে বলেন, সুজন অনেক আগে হাসপাতালের আইসিইউতে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করতো বলে আমার পরিচিত মাত্র। তার সাথে এর বাহিরে ব্যবসায়ীক কোনো সম্পর্ক নাই।  র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানাকে কেন্দ্র করে জহিরকে কোন মারধর করি নাই। জহির ওল্টো আমাদের সিকিউরিটি গার্ড আবু কে মারধর করেছে।  তিনি বলেন বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবগত আছে, হাসপাতালের পক্ষ থেকে   তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

বিষয়টি জানতে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ সাব্বির আহমেদের  সাথে দেখা করতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ফোন করা হলে তিনি বলেন আমি এখন অপারেশন থিয়েটারে আছি। বলে ফোন কেটে দেন।

জীবনের নিরাপত্তা চাওয়া আহত জহিরুলকে পুলিশি হয়রানি কেনো করা হচ্ছে জানতে ফোন করা হয় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই রুবেলকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, হয়রানি করার বিষয়টি মিথ্যা। এমন কোনো কাজ করিনি।

উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলাদেশের খবরের প্রতিবেদককে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,দু পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করেছে । আমি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বলেছি। তবে হাসপাতালে সিন্ডিকেট থাকতে পারে।

গেলো সোমবার (১৬ আগস্ট) উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের ৫ সড়কের ৫২ নং সালাউদ্দিনের বাড়িতে এইচ এস ডিস্ট্রিবিউশন নামের একটি অবৈধ কারখানায়  দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র‍্যাবের ১ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। মুলত এর জের ধরেই পরবর্তীতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজে নিন্মমানের চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহকারী সিন্ডিকেট, দাবী আহত জহিরুলের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads