ভবিষ্যতের বিটকয়েন ইনিশিয়েটিভ কিউ

সংগৃহীত ছবি

তথ্যপ্রযুক্তি

ভবিষ্যতের বিটকয়েন ইনিশিয়েটিভ কিউ

  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর, ২০১৮

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে অনেক পরিবর্তন চলে এসেছে। আর এই পরিবর্তনকে সাময়িক না করে পরিবর্তনশীল করতে কাজ করে যাচ্ছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও গবেষকরা। সেই ধারাবাহিকতায় ধাপে ধাপে পরিবর্তন এসেছে আমাদের লেনদেনের ক্ষেত্রেও।

একটা সময় ছিল ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করার। পরে তা ডেবিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সহজ হলো, এরপর এলো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস। যার মাধ্যমে মোবালই হয়ে গেল মানিব্যাগ। সঙ্গে যুক্ত হলো অনলাইন পেমেন্ট। যেখানে ক্লিকেই সমাধান। আর এতে করে নগদ টাকার চেয়ে ডিজিটাল মুদ্রায় লেনদেন বেড়ে গেল বহুগুণ।

এই পর্যন্তই থেমে থাকেনি প্রযুক্তি। টাকার প্রচলনকেও ডিজিটাল করতে গবেষকরা ইতোমধ্যে বেশকিছু ভার্চুয়াল মুদ্রা আবিষ্কার করে ফেলেছেন। এই ভার্চুয়াল মুদ্রাও আবার কয়েক ধরনের। বিটকয়েন, লাইটকয়েন, এথেরিয়াম, রিপল নামে পরিচিত। এখন পর্যন্ত চালু থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিটকয়েনের মূল্যমান এখন প্রায় ১০ হাজার ডলার। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিটকয়েনের বাজার পুঁজির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৩০ বিলিয়ন ডলার। আর সম্প্রতি বাজারে নতুন আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছি ইনেশিয়েটিভ কিউ নামের নতুন একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা। যা ভবিষ্যতের বিটকয়েন হতে পারে বলে আশা করছেন এর উদ্যোক্তারা।

ইনিশিয়েটিভ কিউ- নামের সঙ্গেই নতুন উদ্যোগ বোঝা যাচ্ছে। যেই উদ্যোগের সঙ্গে মিশে আছে অনেক বড় স্বপ্ন। ইনিশিয়েটিভ কিউ মূলত বিটকয়েনের মতোই একটি ভার্চুয়াল কারেন্সির নাম। আর এর উদ্যোক্তা হচ্ছেন পেপ্যালের সাবেক কয়েক কর্মকর্তা। বিশ্ব বিখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন বলছে, এটি একটি নতুন বিট কয়েন। চার মাস আগে শুরু হওয়া ইনিশিয়েটিভ কিউতে প্রতিদিন এক লাখের বেশি নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত হচ্ছে। শুধু একজনের ইনভাইটেশনে নতুন একজন ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারছে। ইনিশিয়েটিভ কিউ তাদের প্রাথমিক পলিসিতে ব্যবহারকারীর খুব বেশি তথ্য নিচ্ছে না। শুধু নাম এবং ইমেইল আইডি দিয়েই অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যাচ্ছে। ইনিশিয়েটিভ কিউ তাদের কারেন্সির নাম দিয়েছে কিউ (Q) কারেন্সি। এই মুহূর্তে প্রতি কিউর টার্গেট ভ্যালু ধরা হচ্ছে এক ডলার করে। বিট কয়েনের শুরুতে প্রতি বিট কয়েন এক ডলারের কম দাম ছিল। যা বর্তমানে ৩-৪ হাজারে ওঠা-নামা করে। তাই ভবিষ্যৎ কিউ কারেন্সি ৩-৪ হাজার ডলার দাম উঠলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিট কয়েন যেমন শুরুতে অল্প পরিশ্রমে কয়েন মাইনিংয়ের সুযোগ দিয়েছিল, ইনিশিয়েটিভ কিউও তাই করছে। শুধু কার ইনভাইটেশন নিয়ে জয়েন করলেই ২-৩ হাজার কিউ (Q) দিচ্ছে। প্রতিদিনই কিউ দেওয়ার পরিমাণ কমছে। প্রথম অবস্থায় ১০ হাজারের ওপর কিউ দেওয়া হলেও, বর্তমানে তা ২-৩ হাজারে নেমে এসেছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন টাস্ক কমপ্লিট করে কিউ আয় করা যাচ্ছে। ইনভাইটেশন ছাড়া ইনিশিয়েটিভ কিউতে এখনো সরাসরি অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না। যাদের অ্যাকাউন্ট আছে, তারা প্রথম পাঁচজনকে ইনভাইটেশন লিঙ্ক দিতে পারে। লিঙ্কে ক্লিক করে কেউ অ্যাকাউন্ট খোলার পর, ইনভাইটেশন দাতাকে নতুন অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করতে হয়। আর অ্যাকাউন্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ২ হাজার ৩০০-এর মতো কিউ অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। এভাবে প্রথম পাঁচজনকে ভেরিফাই করতে পারে। পাঁচজন হয়ে গেলে, ইনিশিয়েটিভ কিউ আরো ১০ জনের ইনভাইটেশন পারমিশন দেয়।  ভবিষ্যতে এই কারেন্সির যখন মূল্য বৃদ্ধি হবে, তখন বর্তমানে জমা হওয়া কারেন্সির দাম বাংলাদেশি টাকায় কোটি টাকার ওপর উঠতে পারে। অবশ্য উদ্যোক্তারা বিষয়টিকে লটারির মতো করে ভাবছে।

যদি বিটকয়েনের মতো হয়ে যায়, তবে তো কোটিপতি। যদি নাও দাঁড়াতে পারে, তবেও ক্ষতি নেই। কেননা, এর জন্য কোনো বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না।

মাসুদ রানা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads