সিলেটের বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে খালাস পেয়েছেন ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী। আজ বুধবার বুধবার সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।
খালাস পাওয়া শফিউর রহমান ফারাবী বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার সময় আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং ফারাবী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
গত ১৪ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন বিচারক।
সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নূরানী আবাসিক এলাকার ২০১৫ সালের ১২ মে বাসার সামনে খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চেরও সংগঠক ছিলেন।
এরপর দিন তার বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
শুরুতে মামলাটি পুলিশের হাতে ছিল। পরে মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। মামলা হাতে নিয়ে তদন্তে নামেন সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী। তদন্ত সাপেক্ষে অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আসামিদের মধ্যে কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তবে ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মান্নান রাহী মারা যান।
জীবিত পাঁচ আসামির মধ্যে কারাগারে ছিলেন আবুল খায়ের রশীদ আহমদ ও ফারাবী। আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন।
বহুল আলোচিত এ মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালত সাক্ষী নিয়েছে ২৪ জনের। আসামিরা সবাই সিলেটের বাসিন্দা।