নিজস্ব প্রতিবেদক:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে ঝুঁকছে টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এআই চ্যাটবট হচ্ছে চ্যাটজিপিটি। এটি চালু করেছে ওপেনএআই। বিষয়টি আমাদের কাছে নতুন হলেও ভবিষ্যতে ব্যবসায়কি উন্নয়নে চ্যাটজিপিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউট অব কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন, এফসিএমএ।
আজ (৩০ মার্চ) শনিবার আইসিএমএবির আয়োজিত ‘ চ্যাটজিপিটি ফর কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ ’ বিষয়ক অনলাইন সেমিনারে এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন তার বক্তেব্যে বলেন, চ্যাটজিপিটিতে ট্রান্সফরমার এমন একটি মেশিন লার্নিং মডেল, যা কোনো কিছুর বিষয়ে সহজেই বুঝতে পারে। চ্যাটজিবিটি হলো আসলে একটি চ্যাটবট যা ওপেনআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। জিপিটি-৩.৫ এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে এটি, যা আসলে একটি ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। এআই বা ওপেনআই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে। চ্যাটজিপিটি উন্মুক্ত করার মাত্র এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। চ্যাটবট হলো এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গঠন করা হয়। এটি একটি বড় ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল যাকে অসংখ্য ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়। ফলে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মতো করে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে; অর্থাৎ ম্যাসেজের রিপ্লাই দিতে পারে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থ্রিবিং স্কিলস লিমিটেডের ফাউন্ডার সিইও মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তিনি আলোচনায় বলেন , চ্যাট জিপিটি-র চ্যাটবটটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যা আপনার যে কোনো প্রশ্নের উত্তর গুগলের চেয়ে ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। রিসার্স, ব্লগ, ইমেইল, ভিডিওসহ বিভন্ন টুলসের ব্যবহার প্রেজেন্টেশনের মাধ্যম তুলে ধরেন। এছাড়াও তুলে ধরেন জেমিন আই এবং চ্যাটজিপিটির মধ্যকার পার্থাক্য।
তিনি আরো বলেন, টেক ব্লগাররা একে গুগলের চেয়ে ভালো প্রযুক্তি বলছে। কারণ আপনি যখন গুগলে সার্চ করেন, তখন এটি আপনাকে গুগলের মতো অনেকগুলো লিঙ্ক দেখায় না। তার পরিবর্তে সঙ্গে সঙ্গেই সেকেন্ডের মধ্যে সঠিক উত্তরটি আপনার সামনে রেখে দেয়।চ্যাটজিপিটির রয়েছে আকর্ষণীয় কিছু ফিচার। সাইবার সিকিউরিটি, ভূল তথ্য যাচাই, রচনা লেখা থেকে শুরু করে গানের লিরিক্স লেখা, গল্প লেখা, এমনকি কবিতা লিখতেও নির্দেশ দেওয়া যাবে এই চ্যাটবটকে। তিনি এসময়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পেইড এবং নন পেইড সার্ভিস নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এক্ষত্রে বেশ কিছু পার্থাক্য রয়েছে পেইডের ক্ষেত্রে সেক্ষেত্রে ১০:১০০ বলা চলে।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বকেত্যে মো. আব্দুর রহমান খান এফসিএমএ বলেন, চ্যাটজিপিটি আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যা চর্চ্চায় আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। পরিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেমিনার শেষ করেন।
উল্লেখ্য, চ্যাটজিপিটি অর্থাৎ চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেনড ট্রান্সফরমার। আপনি যখন গুগলে কিছু সার্চ করেন তখন গুগল আপনাকে সেই জিনিস সম্পর্কিত অনেক ওয়েবসাইট দেখায় কিন্তু চ্যাট জিপিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন উপায়ে কাজ করে। এখানে আপনি যখন কোনো প্রশ্ন সার্চ করেন চ্যাট জিপিটি আপনাকে সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেখায়। চ্যাট জিপিটি-এর মাধ্যমে আপনি প্রবন্ধ, ইউটিউব ভিডিও স্ক্রিপ্ট, কভার লেটার, জীবনী, ছুটির আবেদন ইত্যাদি খুব সহজেই লিখতে পারবেন। চ্যাট জিপিটি ২০১৫ সালে স্যাম অল্টম্যান নামে এক ব্যক্তি ইলন মাস্কের সাথে শুরু করেছিলেন। যখন এটি শুরু হয়েছিল এটি একটি অলাভজনক কোম্পানি ছিল কিন্তু ১ থেকে ২ বছর পর এই প্রকল্পটি ছেড়েদেন ইলন মাস্ক। এরপরে, বিল গেটসের মাইক্রোসফ্ট কোম্পানি এটিতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করে এবং এটি ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর একটি প্রোটোটাইপ হিসাবে চালু হয়। চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে এর ওয়েবসাইট। আসলে কোম্পানির ডেভলপার দ্বারা এটিকে বিশেষভাবে এবং এখানে যে ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে এই চ্যাট বটটি আপনার অনুসন্ধান করা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় এবং তারপরে সঠিকভাবে, সঠিক ভাষায় উত্তর দেয় তারপরে ফলাফলটি প্রদর্শন করে আপনার সামনে। এখানে আপনি এটির দেওয়া উত্তরে সন্তুষ্ট কিনা তা বলার অপশন পাবেন। আপনি যে উত্তর দেন না কেন এটি তার ডেটা স্টোরকে ক্রমাগত আপডেট করতে থাকে। যাইহোক, আপনার জানার জন্য আমরা আপনাকে বলে রাখি যে ২০২২ সালে চ্যাট জিপিটি-এর প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এখানে যে প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করা হোক না কেনো, তার উত্তরগুলি আপনাকে নিবন্ধের মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে দেখাবে। আপনি এখানে যে প্রশ্নই করুন না কেন আপনি রিয়েল টাইমেই তার উত্তর পেয়ে যাবেন।