বাণিজ্যিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি গত অক্টোবর মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিলেও গত সোমবার জানিয়েছে চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত সর্বশেষ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আপডেট প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ, ইউরোপের অর্থনীতির দুর্বল অবস্থা প্রভাবিত করবে সারা বিশ্বকেই।
আইএমএফ বলছে, শুল্ক-পাল্টাশুল্কের চাপে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও কমবে। চলতি বছর ও আগামী বছর চীনের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশ হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিও চলতি বছর ২ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও আগামী বছর কমে ১ দশমিক ৮ শতাংশ হবে।
এছাড়া ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্যাপক অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। এই বছর ও আগামী বছর ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে দেশটির।
যুক্তরাজ্য ছাড়াও ইউরোপের বেশ কিছু উদীয়মান বাজার অর্থনীতির দুর্বলতার প্রভাবে ২০১৯ ও ২০২০ সালে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।
সংস্থাটি বলছে, উঠতি অর্থনীতি এবং উন্নয়নশীল ইউরোপের অবস্থা বেশ নাজুক হবে চলতি বছর। ইইউ পরিবেশমন্ত্রীদের নির্গমন কমানোর নতুন লক্ষ্যমাত্রা জার্মানির মোটর শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ ছাড়া ইতালিকে নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। সরকারি ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংস্থাটির হিসাবে ২০১৯ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ২০২০ সালে তা কিছুটা বেড়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াবে। অর্থাৎ গত অক্টোবরে সংস্থাটি যে পূর্বাভাস দিয়েছিল নতুন পূর্বাভাসে তার চেয়ে যথাক্রমে শতকরা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কম।
তবে গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির রেখাটা ঊর্ধ্বমুখী থাকছে ল্যাটিন আমেরিকা ও ভারতের জন্য। চলতি বছর ও আগামী বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ ও ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
এ সপ্তাহে ডাভোসে বসছে বিশ্ব নেতা ও ব্যবসায়ীদের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠক। তার প্রাক্কালে আইএমএফ এই পূর্বাভাস দিয়ে বলছে, নীতিনির্ধারকদের এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।
সংস্থাটির প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্ড বলেন, দুই বছর অর্থনীতির সম্প্রসারণের পর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এতে ঝুঁকি বাড়ছে।