বেড়েছে রফতানি আয়

প্রতীকী ছবি

আমদানি-রফতানি

বেড়েছে রফতানি আয়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৯ অক্টোবর, ২০১৮

দেশের রফতানি আয় ছন্দে ফিরেছে। চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রায় ১৫ শতাংশ রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তৈরি পোশাক, কৃষি পণ্য, প্রকৌশল পণ্য ও আসবাবপত্রসহ বেশ কিছু পণ্যের ওপর ভর করে রফতানি আয়ে বড় উল্লম্ফন হয়েছে। 

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইবিপি) তথ্যমতে, গত তিন মাসে যে রফতানি হয়েছে তা সরকার ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।

গতকাল সোমবার সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি বাবদ দেশের আয় হয়েছে ৯৯৪ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৬৬ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৩৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুলাই ও আগস্টে দেশের রফতানি আয় হয় ৬৭৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৬৬২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।

গত তিন মাসে রফতানি আয় বেড়েছে এমন গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি, পোশাক, প্লাস্টিক, আসবাব, প্রকৌশল পণ্য ও সিরামিকস। অন্যদিকে, আয় কমেছে হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ও জাহাজ নির্মাণ থেকে। 

একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি আয়ে বড় উল্লম্ফন হয়েছে। প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এই মাসে মোট রফতানি দাঁড়িয়েছে ৩১৪ কোটি ডলারের কিছু বেশি। সরকারের লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল ২৭৪ কোটি ডলার। গত বছরের এই মাসে রফতানির পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি ডলার। 

জুলাই-সেপ্টেম্বরে হিমায়িত খাদ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে এ আয়ের পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখ। এই হিসাবে আয় কমেছে ১৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। এই সময় আয়ের লক্ষ্য ছিল ১২ কোটি ৮ লাখ ডলার।

কৃষিপণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ২৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এই সময় ছিল ১৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। কৃষিপণ্য রফতানি প্রথম প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ৭১ শতাংশ। জুলাই-সেপ্টেম্বরে এই খাত থেকে সরকারের আয় লক্ষ্য ছিল ১৭ কোটি ডলার।

আলোচ্য সময়ে পোশাক খাত থেকে আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। রফতানি আয় হয়েছে ৮১৯ কোটি ডলার। সরকারের ঘোষিত ৭৮২ কোটি ডলার অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।  আগের বছরের এই তিন মাসে ছিল ৭১৪  কোটি ডলার।

পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ২১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ আয় কম হয়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার। সেই হিসাবে আয় কমেছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

প্রকৌশল পণ্য থেকে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। আগের প্রান্তিকে ছিল ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এই সময় প্রকৌশল পণ্য থেকে সরকার আয় করার লক্ষ্য রেখেছিল ৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে আয় হয় ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আর এই অর্থবছরের উল্লিখিত সময়ে আয় হয়েছে ২৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ছিল ২৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। তবে সেবা খাত বাদ দিলে রফতানি আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সেবা রফতানি করে ৫০০ কোটি ডলার আয় করবে বাংলাদেশ। আর মোট রফতানি আয়ের প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার আসবে পোশাক খাত থেকে। গত অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল ৩ হাজার ৬০০ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads