ক্যাম্পাস

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা সাত শর্তে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩ নভেম্বর, ২০২০

করোনার মধ্যেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া যাবে। তবে এজন্য মানতে হবে সাতটি শর্ত, যার একটি হলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, এই নির্দেশনা দেওয়ার পর পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস নিতে আর বাধা রইলো না।

তবে কবে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে, সে সিদ্ধান্ত ইউজিসি নেবে না। এটি স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর ছেড়ে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সময় অনুযায়ী এই পরীক্ষা নিতে পারবে।

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ইউজিসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে, এই বিয়ষটি নিয়ে আমরা দুই এক দিনের মধ্যে একটি বৈঠক করব। এরপর কত তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হবে, তা জানানো হবে।

সাত শর্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপাচার্য করোনার চিকিৎসার দায়ভার নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তার আপত্তির কথা জানান। তিনি বলেন, ইউজিসি দায় এড়াতে এ ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে। তবে আমরা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি ও ইউজিসির নির্দেশনা মেনে পরীক্ষা ও ক্লাস নেব।

করোনার মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও গত ২৭ অক্টোবর এক বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সেদিন ইউজিসির সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এ অনুমতি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের বিপদ থেকে মুক্তি দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানানো হয়।

ছয় দিন পর জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে:

 

 ১. কেবল অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের সব শেষ সেমিস্টারের ব্যবহারিক ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া যাবে।

২. এক দিনে একটি প্রোগ্রামের একটির বেশি ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

৩. এই ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব। প্রতিজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দূরত্ব থাকতে হবে ন্যূনতম ছয় ফুট। প্রতি ক্লাসে এক সঙ্গে সর্বোচ্চ ১০ জন অংশ নিতে পারবে।

৪. শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে।

৫. ক্যাম্পাস ও ক্লাসে স্যানিটাইজার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৬. ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর কেবল আধা ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে আসা যাবে। আর ক্লাস শেষের আধা ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে।

৭. সংশ্লিষ্ট কোর্সের মৌখিক পরীক্ষা অনলাইনে নিতে হবে।

বিশ্বময় ছড়িয়েপড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তৃতীয় দফা ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশে ৯১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে পড়াশোনা করেন তিন লাখ ৬১ হাজার ৭৯২ জন ছাত্রছাত্রী।

করোনা পরিস্থিতিতে এতদিন অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা চলছিল।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে এখনই কিছু ভাবছে না ইউজিসি।

১৪ নভেম্বর পর সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন-তাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়বে কি না-এই প্রশ্নে মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads