সঞ্জীব কুমার রায়, নাজিরপুর
নাজিরপুর উপজেলায় গত পাঁচ বছরে পোল্ট্রি শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। নাজিরপুর প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে মাত্র ৮৪টি মুরগি ও হাঁসের খামার ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে ১৫৬টিতে উন্নীত হয়েছে। নতুন পোল্ট্রি খামারির অধিকাংশই গরিব বেকার ও শিক্ষিত যুব-মহিলা। উপজেলা পশু ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুদেব সরকার বাংলাদেশের খবর প্রতিনিধিকে উপজেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি খামার ঘুরিয়ে দেখান। উপজেলার এ ধরনের সক্রিয় ও সচেতন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তৎপরতার কারণেই তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন।
পোল্ট্রি শিল্প উপজেলার দরিদ্র ও বেকার শিক্ষিত যুব-মহিলাদের জীবনে বয়ে এনেছে আশীর্বাদ। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ১৪৩টি গ্রামে মোট জনসংখ্যা ২ লাখের অধিক। এর মধ্যে বেকার যুব মহিলাদের একটি বৃহৎ অংশ জড়িয়ে আছে পোল্ট্রি শিল্পে। উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ৯টি ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে ১৫৬টি মুরগি ও হাঁসের পোল্ট্রি ফার্ম। এর মধ্যে ব্রয়লার ফার্ম রয়েছে ৫৭টি, মুরগির সংখ্যা ১ লাখ ৭ হাজার ৭৩২টি। লেয়ার জাতের ফার্ম রয়েছে ৪৭টি, মুরগির সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪০টি। পাকিস্তানি মুরগির ফার্ম রয়েছে ৫টি। মুরগির সংখ্যা ১ হাজার ৮০০ এবং দেশি মুরগির সংখ্যা ১ লাখ ৭ হাজার ৭৩৬টি। বিভিন্ন জাতের হাঁসের ফার্ম রয়েছে ৪৭টি। হাঁসের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২২টি।
উপজেলার কবিরাজবাড়ির ছিদ্দিক ভূঁইয়া (৪৭) ১০ বছর ধরে পোল্ট্রি ফার্মের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে তার ফার্মে ১ হাজারটি লেয়ার জাতের মুরগি রয়েছে। ছিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, ১১ মাস আগে ১ হাজার মুরগি পালন শুরু করি। পাঁচ মাস আগে থেকে প্রতিদিন ৭৮০ থেকে ৮০০ ডিম পাচ্ছি। প্রতিদিন ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৬ হাজার টাকার। এ হিসাবে প্রতিদিন তার আয় হচ্ছে ২৪ থেকে ২৫শ টাকা। এভাবেই তিনি ১০ বছর ধরে মুরগি পালন করে আসছেন এবং ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। এভাবে লড়া গ্রামের দুলাল শিকদার, অধীর ঘড়ামী, শাঁখারীকাঠি গ্রামের আলী আকবর, হোগলাবুনিয়া গ্রামের ইউসুফ আলী, দীর্ঘা গ্রামের স্বপন হালদার, সমীর বিশ্বাসসহ শিক্ষিত বেকার যুবকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে মুরগি পালন শুরু করেছেন।