এমন বন্ধু আর কে আছে?‘সালি’র ছবি দেখে সে কথাই মনে হচ্ছে সকলের। ফ্ল্যাশের ঝলকানি, সংবাদ মাধ্যমের ভিড়, প্রিয়জনদের শোক--- এসবের মানে ঠিক কতটা সে বুঝেছে তা জানা নেই। কিন্তু এ টুকু সম্ভবত সে টের পেয়েছে যে, তার মনিব আর কখনো স্নেহ ভরে মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেন না। তাই বলে তো আর মনিবকে ছেড়ে যাওয়া যায় না। প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের কফিনের পাশে তাই চুপচাপ পা ছড়িয়ে বসে ছিল সালি। সালি মানে সিনিয়র বুশের ‘সার্ভিস ডগ’। জীবনের শেষ প্রান্তে এক অশক্ত নবতিপরের অন্তিম সঙ্গী। সেই হৃদয় স্পর্শী ছবিটিই তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিয়েছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জিম ম্যাকগ্রাথ। নীচে ক্যাপশন ‘মিশন কমপ্লিট।’ তারপর থেকেই ভাইরাল সালি। শুধু টুইটারেই ৬০ হাজার লাইক পড়েছে ছবিটিতে। ইনস্টাগ্রামে আরো ৫৭ হাজার।
অবশ্য এখনো কাজ শেষ হয়নি তার। সোমবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে চেপে শেষবারের মতো টেক্সাস থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যখন সিনিয়র বুশ আসবেন, তখনো তার পাশে থাকবে সালি। বুধবার আবার সে ফিরে যাবে মনিবের সঙ্গেই। তারপর ছুটি। তবে পুরোপুরি নয়। এখন ২ বছরের ওই লাব্রাডরটিকে বয়স্ক ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করা হবে। তবে আপাতত সে ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারে যাবে বলেই জানিয়েছেন সিনিয়র বুশের ছেলে তথা আরেক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তার ভাষ্য, ‘পোষ্যটিকে আমাদের পরিবার তো মিস করবেই। কিন্তু ভেবে ভাললাগছে যেভাবে ও বাবাকে সাহায্য করতে সেভাবেই ওর নতুন বাড়ি, ওয়াল্টার রিডের সদস্যদেরও সাহায্য করবে।’
আপাত নিরীহ সালি কিন্তু হরেক কাজের কাজী। ডোরবেল বাজল? কোনো চিন্তা নেই, সালি খুলে দেবে। ফোন এসেছে? সালি হাতের কাছে এনে দেবে। এক কথায় জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাট সব করতে পারে সে। কেউ কেউ রসিকতা করে বলতেন, সালি শুধু মার্টিনি পরিবেশন করতেই যা জানে না। কিন্তু সেখানেও চিন্তা নেই। মার্টিনি বানাতে পারেন এমন কাউকে ঠিক হাজির করে দেবে সে।
এই ‘বহুমুখী প্রতিভার’ জন্যই সিনিয়র বুশের স্ত্রী বারবারার মৃত্যুর পর সালিকে পাঠানো হয়েছিল তার কাছে। সেই থেকে হুইলচেয়ার বন্দি পার্কিনসন্সের রোগী প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছায়াসঙ্গী ছিল সে। এমনকিগত মাসে আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে মনিবকে ভোট দিতেও সাহায্য করেছিল ২ বছরের সোনালি রঙের সালি।