দিনাজপুরের বিরলে রুপালী বাংলা জুট মিলে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১১শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে গুলিতে ১ জন নিহতের ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের ঘটনায় কোন মামলা দায়ের করেনি পরিবার কিংবা শ্রমিকরা।
বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসিম হাবিব জানান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ভাংচুর ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জনের নাম দিয়ে অজ্ঞাত আরও ১১শ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বিরল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদের। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
একটি ইউডি মামলা দায়ের করে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
এছাড়া পুলিশের সাথে সংঘর্ষে গুলিতে ১ জন নিহতের ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সচিন চাকমাকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাফিজুল ইসলাম ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি এটিএম গোলাম রসুলকে সদস্য করা হয়েছে।
অপরদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) শরিফুল ইসলামকে প্রধান করে বিরল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিনাত রহমানকে সদস্য করা হয়েছে। দুটি কমিটিই আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই বিরল উপজেলার রুপালী বাংলা জুট মিল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হলেও কোন প্রকার সিদ্ধান্ত হয়নি। এতে শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে ভাংচুর শুরু করে। এসময় পুলিশ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে, যাতে সুরত আলী নামে একজন পান দোকানী নিহত হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ১০জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আর পুলিশ দাবি করেছে, এই ঘটনায় তাদের ৩ জন সদস্য আহত হয়েছে। নিহত সুরত আলী বিরল পৌরসভা এলাকার হোসনা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।