প্রয়োজনে প্রতিবছর একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম (ট্যারিফ ভ্যালু) পরিবর্তন অর্থাৎ কমাতে বা বাড়াতে পারবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এই বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০১৯-এর চূড়ান্ত অনুমোদন, কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৯, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘এক্সট্রাডিশন এবং মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ইন ক্রিমিনাল ম্যাটারস্্’ সংক্রান্ত চুক্তির প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় দুটি কোম্পানি গঠনের খসড়া এবং ‘প্রটোকল রিলেটিং টু দ্য মাদ্রিদ অ্যাগ্রিমেন্ট কনসার্নিং দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন অব মার্কস ১৯৮৯-এ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গতকাল সোমবার তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গ্যাস সম্পদ ও পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের সঞ্চালন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, এ খাতে ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, ট্যারিফ নির্ধারণে স্বচ্ছতা আনয়ন, ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টিতে কাজ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনটি ছিল ২০০৩ সালের। তাতে একটা প্রভিশন ছিল, কমিশনের নির্ধারিত ট্যারিফ কোনো অর্থবছরে একবারের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না, যদি না জ্বালানি মূল্যের পরিবর্তনসহ অন্য কোনোরূপ পরিবর্তন ঘটে। তিনি বলেন, সংশোধিত আইনে এটাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ট্যারিফ কোনো অর্থবছরে কমিশনের একক বা পৃথক পৃথক আদেশ দ্বারা, প্রয়োজন অনুসারে এক বা একাধিকবার পরিবর্তন করতে পারবে। সংশোধিত আইনে শুধু এটুকুই পরিবর্তন আনা হয়েছে। অন্যান্য যেসব বিধান ছিল তা আগের মতোই আছে।
এ পরিবর্তন আনার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওনারা (বিইআরসি) দেখছে অনেক সময়ই (বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম) পরিবর্তন করা প্রয়োজন হতে পারে। রিজিট না থেকে অপশন রইল, সেজন্যই। প্রয়োজনে ট্যারিফ চেঞ্জ (পরিবর্তন) করা লাগতে পারে। কিন্তু আগের আইনে রিজিট (অনমনীয়) ছিল, এখন বিষয়টি ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) করা হলো। এর মানে এই আইন হলে বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ জ্বালানির দাম বছরে একাধিকবার বাড়াতে পারবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এক বা একাধিকবার পরিবর্তন করতে পারবে। বাড়াতে পারবে আবার কমাতেও পারবে।