মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গনের ফলে দেখা দেওয়া বন্যার পানিতে বানবাসি মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গত শুক্রবার ভোরে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পৌরসভার রামপাশা এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে কমলগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড সম্পূর্ণ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। শনিবার কিছুটা কমলেও রবিবার সকালে আবার ধলাই নদীর বিপদসীমা অতিক্রম করার সাথে বাড়তে থাকে পানি।
উপজেলার অন্যান্য ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যার পানি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড ও ৮ নং ওয়ার্ডের আংশিক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। রবিবার সন্ধ্যায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রামপাশা- চৈত্যনগঞ্জ সড়কে পানি উঠেছে। রামপাশা গ্রামের প্রতিম ধরের বাড়ির সামনে রবিবার ভোর ৩টায় নতুন আরেকটি ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে করে আরো কয়েকটি বাড়িতে পানি উঠে। চরম দুর্ভোগে পড়েন পানি বন্দী লোকজন। তিন দিন ধরে পানিতে প্লাবিত রামপাশা। বিশেষ করে রামপাশা গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক মানুষজন পানি বন্দি হয়ে পড়েন। বাড়ি ঘরের উঠানে প্রায় ২/৩ ফুট পানি। পানির মধ্যে কেউ ঘর থেকে বের হতে পাচ্ছেন না। সন্ধ্যার পর হতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকের আধা পাকা ঘরে পানি উঠেছে। আবার অনেক ঘর কাচা সেগুলো ঝুকিঁপুর্ণ অবস্থায় রাত্রী যাপন করছেন।
সরেজমিনে রোববার রাতে এলাকায় দেখা যায়, হাঁটু পানি বেয়ে অনেকইে নিরাপদ স্থানে ছুটছেন। আবার যাদের যাবার জায়গা নেই তারা পানির মধ্যে ঘরে রাত্রী যাপন করেছেন। শুধু পানি নয় সারারাত বৃষ্টির কারনে আরো দুভোর্গ বেড়ে যায় তাদের।
পানি বন্দি ওমর পাল, প্রসেনজিৎ পালসহ অনেকেই বলেন, আমরা পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছি। শুক্রবার এর চেয়ে দ্বিগুন পানি আজ বের হয়েছে। সারারাত কিভাবে কাটাবো বুঝতে পারছিনা।
রামপাশা গ্রামের পশ্চিম এলাকায় দুইজন মহিলা জানান, ঘরে পানি উঠায় রাস্তার পাশে ঠাঁই নিয়েছেন। তাদের পাশে আরেকটি পরিবার গবাদিপুশসহ আশ্রয় নিয়েছেন। পর্যাপ্ত ত্রাণ নেই। রাতে অনেকের ঘরে খাবার ছিল না। আজ সোমবার সকালেও পৌরসভার রামপাশা, কুমড়াকাপন গ্রামের ২ শতাধিক পানি বন্দি রয়েছেন।
কমলগঞ্জ পৌর মেয়র জুয়েল আহমেদ বলেন, রামপাশার ভাঙ্গনে মানুষজন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গ্রামের সবাই পানি বন্দি। শুক্রবারের চেয়ে বন্যার পানি গত দিন বেড়েছে। একই ভাবে বন্যায় রহিমপুর, ইসলামপুর, আদমপুর ও পতনউষার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের পানি বন্দি মানুষজন দুর্ভোগে রাত কাটিয়েছেন।