বাগেরহাটে বোরো ধানের বাম্পার ফলন: শ্রমিক সংকটে বিপাকে কৃষক

ছবি: বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

বাগেরহাটে বোরো ধানের বাম্পার ফলন: শ্রমিক সংকটে বিপাকে কৃষক

  • এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট
  • প্রকাশিত ১৯ এপ্রিল, ২০২০

বাগেরহাটে এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনা সংকটে বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষীরা। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে তাদের। কৃষি বিভাগ বলছে, করোনার প্রভাবে শ্রমিক জন্য কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপর নির্ভর করতে হবে। ইতোমধ্যে ভর্তুকি মূল্যে কিছু রিপার বিতরণ করা হয়েছে।

অনুকূল আবহাওয়া, সরকারি সহায়তা ও কৃষি বিভাগের তদারকিতে এ বছর বাগেরহাটে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ন মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কাঁচা-পাকা ধানের ছড়া। যা কয়েকদিনের মধ্যেই সোনালী ধানে ভরে যাবে। এমন দৃশ্য কৃষক মনে প্রশান্তি যোগালেও শ্রমিক সংকটে ধান ঘরে তোলা নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে। করোনার সংক্রমণের ভয় ও সারা দেশে লকডাউনের কারণে বেশি মুজুরির দিয়েও কোনো শ্রমিক পাচ্ছেন না তারা।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার ৯ উপজেলায় এ বছর ৫২ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৫০ হেক্টর, ফকিরহাটে ৮ হাজার ২০০ হেক্টর, মোল্লাহাটে ৮ হাজার ৩২০ হেক্টর, রামপালে ৪ হাজার ৭৫ হেক্টর, কচুয়ায় ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর, মোরেলগঞ্জে ৫ হাজার২০ হেক্টর, চিতলমারী ১১ হাজার ৪৭০ হেক্টর, শরণখোলা ৮৫ হেক্টর, মোংলায় ৫ হেক্টর। এর মধ্যে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) এবং বাকী জমিতে স্থানীয় জাতের ধানের চাষ হয়েছে। এ বছর ২ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন বোরোর আবাদ হবে বলে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ফকিরহাট উপজেলার অর্গানিক বেতাগা এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে ব্যাপক শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। টাকা হলেও কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে। জরুরিভাবে ধান কাটার কৃষি যন্ত্র সরবরাহ না করলে ধান মাঠেই থেকে যাবে।

সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের কৃষক প্রনব কুন্ডু বলেন, এ বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বোরো ধান ফলিয়েছি। ধান ঘরে তোলার জন্য এখন শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এখন কৃষি যন্ত্র ছাড়া কোনো উপায় নেই।

চিতলমারী উপজেলার  সন্তোষপুর এলাকার কৃষক সুখময় ঘরামী বলেন, ধানের বাম্পার ফলন এখন গলার কাটা হতে বসেছে। একদিকে শ্রমিক সংকট অপর দিকে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চাষীরা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। এইমুহুর্তে সরকারী সহায়তা জরুরি।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকতা মো. নাছরুল মিল্লাত বলেন, ফকিরহাটে এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু হ্যান্ড রিপার বিতরণ শুরু হয়েছে।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, বোরো ধান রোপনের সাথে জড়িত জেলার প্রায় ১ লাখ কৃষক পরিবার। তাছাড়া কিছু শ্রমিক জেলার বাইরে থেকে এখানে এসে থাকে। শ্রমিক সংকটে যেন ধান কাটা কোন ভাবেই ব্যহত না হয় সেজন্য কিছু যন্ত্রপাতি বিতরণ শুরু হয়েছে। এই ধরা অব্যহত রাখতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads