বিশালাকার ও বিলাসবহুল সুপারজাম্বো বিমান তৈরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের এয়ারবাস কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এমিরেটসসহ একাধিক বিমান সংস্থা অর্ডার কমিয়ে আনায় ২০২১ সালের মধ্যে ঐতিহাসিক বিমানটির উৎপাদন গুটিয়ে আনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ও ইউরোপের এয়ারবাস কোম্পানি আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের বিমান তৈরির ক্ষেত্রে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এদের রেষারেষির ফলে অনেক দশক ধরে নিত্যনতুন মডেলের বিমান বাজারে আসছে। গত শতাব্দীতে বোয়িং কোম্পানি তার সেভেন-ফোর-সেভেন মডেল বা ‘জাম্বো জেট’ বাজারে এনে বিশাল সংখ্যায় যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে মানদণ্ড স্থির করেছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এয়ারবাস ২০০৫ সালে প্রকৃত দুই তলার বিশালাকার বিমান এথ্রিএইটজিরো বা সুপারজাম্বো আকাশে উড়ায়।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই যাত্রীবাহী বিমান শুরু থেকেই বাজারে সাড়া ফেলেছিল। মূল ডিজাইন অনুযায়ী ৫৪৪ যাত্রী বহন করতে পারে এই সুপারজাম্বো। ২০০৭ সালে বাণিজ্যিক উড্ডয়ন শুরু হওয়ার পর অনেক বড় বিমান সংস্থা ঢালাও অর্ডার দিয়ে এই মডেলের বাণিজ্যিক সাফল্যও নিশ্চিত করে।
তবে গত বৃহস্পতিবার এয়ারবাস কোম্পানি ঘোষণা করেছে, তারা এথ্রিএইটজিরো মডেল তৈরি বন্ধ করতে চলেছে। আরো ১৭টি বিমান তৈরি করার পর ২০২১ সালে শেষ বিমানটি হস্তান্তর করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, সম্প্র্রতি এই মডেলের বিক্রি কমে গিয়েছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমান সংস্থাগুলোর পক্ষে সুপারজাম্বোর রক্ষণাবেক্ষণসহ অনেক ক্ষেত্রে বিশাল ব্যয় সামলানো সহজ হচ্ছে না বলেই অর্ডার কমে চলেছে। এমন ‘হাতি পোষা’র বদলে সংস্থাগুলো আরো ছোট ও মডেলের দিকে ঝুঁকছে।
বিশেষ করে সুপারজাম্বোর প্রধান ক্রেতা সংযুক্ত আরব আমিরাতের এমিরেটস সুপারজাম্বোর বদলে এয়ারবাস কোম্পানিরই অন্য দুই মডেল এথ্রিফাইভজিরো ও এথ্রিথ্রিজিরো নিও কিনতে চলেছে। মোট ৭০টি বিমান অর্ডার দিয়েছে এমিরেটস। তা সত্ত্বেও এয়ারবাস কোম্পানির এই সিদ্ধান্তের কথা জেনে হতাশা প্রকাশ করেছে এমিরেটস।
কোম্পানির প্রধান শেখ আহমেদ বিন সাইদ আল-মাকতুম বলেন, শুরু থেকেই এমিরেটস এথ্রিএইটজিরো মডেলের জোরালো সমর্থক ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতির বাস্তবতা মেনে নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। এমিরেটস ২০৩০ সাল পর্যন্ত এই বিমান চালু রাখবে বলেও ঘোষণা করেন আল-মাকতুম। এদিকে সুপারজাম্বো মডেল তৈরি বন্ধ করার সিদ্ধান্তের ফলে এয়ারবাস কোম্পানির ৩০০০ থেকে ৩৫০০ কর্মীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।