বজ্রপাতে ১১ বছরে ২৮০০ মানুষের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বজ্রপাতে ১১ বছরে ২৮০০ মানুষের মৃত্যু

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১২ অক্টোবর, ২০২১

২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ১১ বছরে বজ্রপাতে মোট ২ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ৫ বছর পদার্পণ উদযাপন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে-এমনটি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির আওতায় বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগে সতর্কবার্তা দেওয়ার যন্ত্র কিনবে সরকার। একই সঙ্গে বজ্রপাত থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে।

বর্তমানে দুর্যোগের ১৬টি ক্যাটাগরি রয়েছে। ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগের তালিকায় যুক্ত করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বজ্রপাত নিয়ে ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তিনটি পর্যায় রয়েছে এই প্রকল্পের। মানুষকে সচেতন করার জন্য কাজকর্ম করবো। বজ্রপাতের আগে মেঘের মধ্যে গুড়ুগুড়ু ডাক হবে। পজিটিভ-নেগেটিভ চার্জগুলো তৈরি হবে। চার্জ তৈরি হওয়ার ৪ মিনিট পরই বজ্রপাত হয়। এজন্য গুড়ুগুড়ু ডাক শুনলে যাতে মানুষ ঘরে থাকে বা মেঘ দেখে যাতে ঘরে থাকে। সেই সচেতনতা তৈরির কাজ আমরা করবো।

তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কতগুলো মেশিন তৈরি করা হয়েছে যেগুলো ৪০ মিনিট আগেই শনাক্ত করতে পারে বজ্রপাত হবে এবং কোথায় হবে সেটা বলতে পারে। তাই বজ্রপাতের ক্ষেত্রে আর্লি ওয়ার্নিং দেওয়ার মেশিনগুলো আমরা বসাবো।

এনামুর রহমান বলেন, আমরা যতগুলো মৃত্যুর খবর দেখেছি, সবগুলো খোলা মাঠ ও হাওরের মধ্যে। শহরে যারা ঘরবাড়িতে বসবাস করে তারা বজ্রপাতে মৃত্যুবরণ করে না। আমরা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র করার পরিকল্পনা করেছি। বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা এবং অন্য এলাকায়ও এটা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ডিজাইন করেছি, এক ডেসিমেল জায়গায় একটা পাকা ঘর থাকবে। প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেওয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পর মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে। বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে।

‘আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বহুমুখী হবে। এখানে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা সকালে নাস্তা করতে পারবেন। দুপুরে খেতে পারবেন। ঝড়-বৃষ্টিতে আশ্রয় নিতে পারবেন। কেউ চাইলে বিশ্রামও নিতে পারবেন’, বলেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রকল্পের কাজ কবে শুরু হবে- জানতে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্প প্রণয়ন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, সেই রিপোর্ট আসলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাবো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মৌখিকভাবে আলোচনা হয়েছে। তিনি সামারি পাঠাতে বলেছেন, তিনি অনুমোদন দিলে আমরা কাজ শুরু করবো।’

২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৮০০ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা গেছে। নিহতদের নাম ঠিকানাসহ তালিকা মন্ত্রণালয়ের কাছে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।

২০১১ সালে ১৭৯, ২০১২ সালে ২০১ জন, ২০১৩ সালে ১৮৫ জন, ২১৪ সালে ১৭০ জন, ২০১৫ সালে ২২৬ জন, ২০১৬ সালে ৩৯১ জন, ২০১৭ সালে ৩০৭ জন, ২০১৮ সালে ৩৫৯ জন, ২০১৯ সালে ১৯৮ জন ও ২০২০ সালে ২৫৫ জন বজ্রপাতে মারা গেছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩২৯ জন মারা গেছেন বলে জানান এনামুর রহমান।

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন উপস্থিত ছিলেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads