বগুড়ায় ছাত্রলীগের দু’ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ নেতা তাকদির ইসলাম খান (২৬) মারা গেছেন। মঙ্গলবার বিকালে বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
তুচ্ছ ঘটনায় দুই গ্রুপের মধ্যে ওই সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর ৪ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে শোক ছায়া নেমে এসেছে। দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। খবর পেয়ে বিকালে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে ছুটে যান। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে হাসপাতাল ও শহরের কেন্দ্রস্থল এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ ও দলীয় সুত্র জানায়, ১১ মার্চ একটি কর্মসূচিতে মোটরসাইকেল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধুনট উপজেলায় যাওয়ার পথে শেরপুর এলাকায় দুই নেতার মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হলে বিরোধের সূত্রপাত। এসময় জেলা ছাত্রলীগের নেতারা উভয় পক্ষকে শান্ত করে ঘটনার মীমাংসা করে দেন। কিন্তু ওই দুই গ্রুপ ধুনট থেকে ফিরে এসে রাত ৯ টার দিকে শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় আবারও বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট ঘটনা ঘটে। এসময় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকদির ইসলাম খান ছুরিকাঘাতে আহত হন। এছাড়াও ওই ঘটনায় আরো ৮ জন আহত হয়। এদের মধ্যে রাতেই ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাকদিরের অবস্থা সোমবার রাতে অবনতি হলে তাকে আইসিইউ’তে স্থানান্তর করা হয়। দুপুরে তার অবস্থা আরো অবনতি হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে তিনি মারা যান।
এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনার পরের দিন ১২ মার্চ সদর থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়। একটি মামলা দায়ের করেন তাকদিরের মা আফরোজা ইসলাম। অন্য মামলাটির বাদি সোহাগ হাসান।
এই দুটি মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো অর্ধশতাধিক জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সদর থানার ওসি আরো জানিয়েছেন, মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন।
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব হাসান শাওন এ ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু বলেন, চিকিৎসা অবহেলার কারণে ছাত্রলীগের এই মেধাবী নেতাকে হারাতে হলো। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে এঘটনার জেরে শহরের পুরান বগুড়া এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে উত্তেজিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।