তাজুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার শোলারতাইড় গ্রামে ধসে পড়া ব্রিজের ১২ বছরেও সংষ্কার হয়নি। এতে এলাকাবাসী যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকাবাসীর দাবি ব্রিজটি পুননির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ হলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন সম্প্রতি দ্রব্য মূলের দাম বৃদ্ধির কারণেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ পিছিয়েছে। আগামী অর্থ বছরের প্রথম দিকেই কাজ শুরুর আশ্বাস দেন উপজেলা প্রকৌশলী তুহিন সরকার।
জানা যায়, উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলারতাইড়—কালারতাইড় গ্রামের কীতৃনাশা খালের ওপর প্রায় একশত বিশ বছর পূর্বে কোনো এক সংস্থা ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করা করে। ওসময় ব্রিজটি নির্মাণে নিম্নমানের ইট—সিমেন্ট এবং বিভিন্ন মালামাল ব্যবহার করার কারণে স্থায়িত্বের নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্রিজের দুই পাশের রেলিং ভেঙে পরে। সর্বশেষ ২০১২ সালের বন্যার প্রবল ে¯্রাতে ব্রিজের দক্ষিণের এক পাটাতন ধসে পড়ে ও মাটি সরে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে শোলারতাইড়, কালারতাইড়, বাঁশহাটা, কুতুবপুর, কাজলা এবং জোড়গাছা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়তের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যানবাহন চলাচলে ২ কিলোমিটার দূরের পথ ৩ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগ আরও বেশি হচ্ছে।
এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইমরান আলী রনি তাঁর নিজস্ব অর্থায়নে ধসে পড়া ব্রিজের দক্ষিণপাশে বাঁশ—কাঠের সংযোগ সেতু নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন। দীর্ঘদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার নিরসনে টেলিভিশন এবং বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ১লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এবং পুনরায় বাঁশ—কাঠের জোড়াতালি সেতু নির্মাণ করা হয়। সর্বশেষ বর্তমান কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজনের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের সেতুর উপর দিয়েই কোনমতে মানুষ পারাপার হচ্ছে।
কালারতাইড় গ্রামের বাসিন্দ কলেজ পড়–য়া রাসেল এবং শোলারতাইড় গ্রামের ইব্রাহিম সহ স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। বর্ষা মৌসুমে আমাদের গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। কাঁঠ ও বাঁশের তৈরি ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে বেশ কয়েকজন গুরতর আহত হয়েছে। গরু—ছাগল মাঠে নেওয়া যায়না এবং মাঠ থেকে ফসল আনতে খুবই বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের।
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, শুনেছি ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের অনুমোদন এসেছে। কাজ কবে শুরু হবে সেটা জানা নেই। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তুহিন সরকার জানান, চলতি বছরেই আমফ্রান প্রকল্পের প্রতিনিধি দল ব্রিজটি পরির্দশন করে নকশা চেয়েছিলেন, আমরা নকশা পাঠিয়ে ছিলাম। আমাদের পাঠানো নকশার অনুমোদন হয়েছে এবং ৬৬মিটার দৈর্ঘ এবং ৭.৩ মিটার প্রস্থের নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য অর্থ ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দও এসেছে। চলতি মাসেই দরপত্র (টেন্ডার) আহ্বান করা হবে। আশা রাখছি আগামী ২০২৩ইং অর্থ সালের জানুয়ারি—ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিজের পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হবে। এজন্য এলাকাবাসী সার্বিক সহযোগীতা প্রয়োজন। বগুড়া—০১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান জানিয়েছেন, ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের অনুমোদন পাওয়া গেছে, আগামী অর্থ বছরেই এর কাজ শুরু হবে। ব্রিজটি দ্রুত পুনঃনির্মাণ ও ভালোমানের কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।