শীতের তীব্রতা কেটে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে গেছে শ্রীপুরে। দিনে সূর্যের তাপে গরমের বেশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ১ জানুয়ারি সারা দেশের মতো গাজীপুরের শ্রীপুরেও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণের উৎসব। তবে এ বই উৎসবে অপ্রয়োজনে শিশু শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ করেছে অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, রোদে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে বইয়ের অপেক্ষায় ছিল কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষা কর্মকর্তা দুপুরের ভূরিভোজে ব্যস্ত থাকায় শিশুরা এ ভোগান্তিতে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী রোদে পুড়ে অসুস্থ হয়। রোদে দাঁড়িয়ে থেকে এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌছে দেওয়া হয়।
বুধবার এমনি ঘটনা ঘটে গাজীপুরের শ্রীপুরে ৩ নং গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লেও শিক্ষা কর্মকর্তা তা জানেন না বলে জানান সাংবাদিকদের।
ক্ষুব্দ অভিভাকরা জানান, বই দেওয়ার কথা ছিল বেলা ১১টায়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম স্কুলে আসেন দুপুরের পরে। বিকেল পৌঁনে চারটার দিকেও শিক্ষার্থীরা রোদে দাঁড়িয়ে ছিল বইয়ের জন্য। এতো বেলাতেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা। '
তারা জানান, কর্মকর্তা স্কুলে ঢুকেই দুপুরের খাবারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রোদে শিশুদের কষ্ট হলেও তারা ভূরিভোজে ব্যস্থ ছিল লম্বা সময় ধরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা জানান, সিফা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী প্রচণ্ড রোদে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থী আমাদের স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বিদ্যালয়ের মাঠে শুইয়ে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করা চেষ্টা করে। পরে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার নাতিকে কোলে করে বই নিতে এসেছেন স্কুলে। বই দিতে এতো দেরি দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড়করিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা দুপুরের খাবার নিয়ে ব্যস্ত। এটা অমানবিক একটা বিষয়। শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে এমন আচরণ আমাদের কাম্য না। এ দিকে গরমে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থতায় ভুগছে। এরি মধ্যে এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। পরে তাকে মাথায় পানি ঢেলে বাড়িতে পাঠানো হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমি নির্ধারিত সময়েই বই উৎসবের অনুষ্ঠানে এসেছি। পরে শিক্ষকরা দুপুরে খাবার আয়োজন করলে একটু সময় সেখানে লেগেছে। শিক্ষার্থীর জ্ঞান হারানোর বিষয়টি আমাকে কেউ বলেনি। সামান্য রোদ ছিল। এই রোদে শিশুদের সমস্যা হওয়ার কথা না। শীতের দিনে রোদ মিষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এটা হতে পারে না। ওই স্কুলের একজন অভিভাবক আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম। এটা ঠিক নয়। এমন করাটা ঠিক হয়নি।