ফেসবুক ব্যবহারে কমছে মূল্যবোধ

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

ফেসবুক ব্যবহারে কমছে মূল্যবোধ

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯

ফেসবুকের মাধ্যমে পরিবারতন্ত্রের বিলুপ্তি এবং পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় প্রকট আকার ধারণ করছে। আমেরিকান একদল আইনজীবী পরিবারতন্ত্র ধ্বংসের কারণ হিসেবে সরাসরি ফেসবুককেই দায়ী করেছেন। তারা বলেন, এখানকার ২৫ শতাংশ বিচ্ছেদ ঘটছে ফেসবুকের কারণে। আবার স্বামী-স্ত্রী পারস্পরিক বিশ্বাসের জায়গাটিতেও আঘাত করছে ফেসবুকের ব্যবহার। ফলে স্বামী-স্ত্রী সন্দেহবাতিক হয়ে উঠছে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ল্যারি রোজেন এক বিবৃতিতে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহার মানুষের মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তার পরিসরকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমন ঘটনাও দেখা যায় ফেসবুক ব্যবহার করছে ঠিকই কিন্তু তার ব্যক্তিগত কিছু যেগুলো নিতান্তই জীবনের জন্য প্রয়োজন সেগুলোর কথায় ভুলে যাচ্ছে সে।

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মনোচিকিৎসক চিকিৎসকদল তরুণ-তরুণীর ওপর চালানো জরিপে দেখেন, যারা নিয়মিত ফেসবুকে ঢুঁ মারছেন তাদের ধূমপান করার প্রবণতা অনিয়মিতদের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। এরা অ্যালকোহল, গাঁজাসহ অন্য মাদক গ্রহণেও ঝুঁকে পড়ছে। এ ধরনের প্রবণতা বাড়ার কারণ, সাধারণত এ ধরনের সাইটগুলোতে কোনো ধরনের সুপরিকল্পিত নিয়মনীতি থাকে না।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সম্পর্ককে এ ধরনের কমিউনিকেশন আরো সহজ সাবলীল করে তুলছে।

উইল্টারশায়ারের সেন্ট ম্যারিস ক্লেইন বিদ্যালয়ের হেলেন রাইট নামের এক শিক্ষিকা ডেইলি মেইল-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সেলিব্রেটিরা উঠতি বয়সী মেয়েদের নির্দয় বানাচ্ছে। অনলাইন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত এসব সাইটের বিভিন্ন পোস্ট, স্ট্যাটাস, মন্তব্য, টুইট, অসংলগ্ন আলাপ, বিকৃত ভাষার ব্যবহার, বন্ধুদের দীর্ঘ তালিকা তরুণীদের মূল্যবোধকে সহজেই পরাস্ত করছে।

তবে সত্য হলো, মূল্যবোধসহ বিভিন্ন অসঙ্গতি থাকলেও ফেসবুকের মাধ্যমে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে জনমত সৃষ্টি, চেতনার জাগরণ ঘটানোও সম্ভব হচ্ছে।

ইয়াহু নিউজের এক খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটি কোম্পানি এভিজি কর্তৃক অভিভাবকের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, বর্তমান যুগে অধিকাংশ মা-বাবাই তাদের সন্তানের ইন্টারনেট কার্যকলাপ নিয়ে চিন্তিত। সন্তানরা কী করছে সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য প্রায় ৭২ শতাংশ অভিভাবকই তাদের টিনএজ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ফেসবুকে ‘বন্ধু’ হিসেবে যুক্ত আছেন।

এদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে ছয়জনই স্বীকার করেছেন, তারা তাদের সন্তানের অজান্তেই তাদের কার্যকলাপের উপর নজরদারি করেন। এভিজি’র তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬১ শতাংশ মা-বাবাই সন্তানের উপর নজরদারি করতে তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে চোখ রাখেন। কেননা, ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই ইন্টারনেটে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের সাইটে সক্রিয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads