'মানুষ মানুষের জন্য' এই কথাটুকু যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের দুই তরুণের প্রচেষ্টায় একজন মানুষিক রসাম্যহীন রোগী খুঁজে পেলো তার নিজ পরিবার।
ওই দুই সমাজহিতৈষী তরুণের নাম জুয়েল আহমদ ও আমিনুল ইসলাম। তারা ফেঞ্চুগঞ্জের উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের যথাক্রমে কোনা পাড়া গ্রামের তমির আলী ও খিলপাড়া গ্রামের চেরাগ আলীর পুত্র। জুয়েল ও আমিনুল দু’জনই কলেজে অধ্যয়নরত।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দুই তরুণ থেকে যায়, গত কয়েকদিন ধরে একজন মানুষিক ভারসাম্য হীন রোগী ফেঞ্চুগঞ্জের কটাল পুর বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। গত ১ লা সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে বাজার এলাকায় ওই মানুষিক ভারসাম্যহীন লোক খুব বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক ওই দুই তরুণ ও তাদের বন্ধু শহীদ উদ্যোগ নিয়ে এবং বাজারের ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আমিনুল অভিযোগ করেন,সেখানে গেলে ফেঞ্চুগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসকরা চিকিৎসায় অনিহা ও অবহেলা দেখান । তা দেখে আমরা সেখানে দুইদিন চিকিৎসার পর আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানীয় থানাকে অবগত করে তাকে নিয়ে ছুটে যাই ওসমানী হাসপাতালে। সেখানে ২ দিন সহ মোট ৫ দিন মানুষিক ভারসাম্যহীন লোকটির সেবাশুশ্রূষা,ওষুধ, পরীক্ষা,রক্ত কালেকশন সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত আর্থিক সহযোগীতা করেন তারা।
পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকটির ছবি পোষ্ট করে পরিবারের খোজ করতে থাকেন। অবশেষে গতকাল ফেসবুকে ছবি দেখে সেই মানুষিক ভারসাম্যহীন রোগীর স্ত্রী-সন্তান ওসমানী হাসপাতালে ছুটে আসেন।
হাসপাতালে এসে তার স্ত্রী-সন্তান জানান, এই ব্যক্তির নাম নানু মিয়া,বাড়ী গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমকোনা গ্রামে। তিনি কয়েকবছর ধরে মানুষিক ভারসাম্যহীন। গত তিনমাস ধরে নিখোজ ছিলেন।
সব পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত হবার পর জুয়েল ও আমিনুল লোকটিকে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেন।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সমাজহিতৈষী তরুণ আমিনুল বলেন, আমরা একজন লোককে অসুস্থ দেখে দূরে সরে থাকতে পারিনি। অনেকে লোকটিকে হাসপাতালে রেখে আসার জন্য বললেও আমরা মানবিকতার তাগিদে তা পারিনি। কারন লোকটি মানসিক ভারসাম্যহীনতার সাথে এক হাত ও পা প্যারালাইজড ছিল।
আমরা লোকটিকে চিকিৎসা শেষে তার পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে আল্লাহ কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।