দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে তিন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি মাঝখানে গড়ে ওঠেছে অবৈধ এসডাব্লিউবি নামের ইটভাটা। এ অবৈধ ইটভাটায় ফসলি জমির উপরিভাগের জমির (টপ সয়েল) মাটি কেটে তৈরি হচ্ছে কাঁচা ইট। কাঁচা ইট পোড়াতে কয়লার সাথে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠের লাকড়িসহ প্লাস্টিক। অবৈধ এ ইটভাটার ফিক্সট চোঙার চিপনি দিয়ে নির্গত কালো ধোঁয়ায় মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা ৪নং বেতদীঘি ইউনিয়নের নথন গ্রামের সড়কের পশ্চিম পার্শ্বের তিন ফসলি জমির ওপর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জের চকদলু গ্রামের জনৈক মোস্তাফিজু রহমান ডাবলু এসডাব্লিউবি নামের ইটভাটা গড়ে তোলেছেন। ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কয়লা পাশাপাশি কাঠের লাকড়িসহ প্লাস্টিক। কাঁচাইট তৈরিতে মাটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ইটভাটা সংলগ্ন ফসলি জমির উপরিভাগের (টপ সয়েল) মাটি।
নথন গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফসলি জমির ওপর ইটভাটা নির্মাণ করে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার গন্ধে গ্রামে থাকা মুশকিল হয়ে গেছে। ছাই গ্রামে এসে পড়ায় গাছপালা, ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি ছাইয়ে ঢেকে যাচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে গ্রামবাসী বিভিন্ন প্রকার শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হবেন। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে গত ১৮নভেম্বর তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ দেওয়ার এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
ব্যবসায়িক অংশিদার নথন গ্রামের এনামুল হক বলেন, বাৎসরিক চুক্তিতে স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়ে ইটভাটার নির্মাণ করা হয়েছে। গত ৯ডিসেম্বর তারিখে ভাটায় আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রথম রাউন্ডের ইট বের করার প্রস্তুতি চলছে। ভাটার আগুনের তাপ বাড়াতে কয়লার সাথে কাঠের লাকড়ি ও প্লাস্টিক পোড়ানো হচ্ছে।
ইটভাটার মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ডাবলুকে তার মুঠোফোন ০১৭৪৯ ৭৭৩১৯৪ নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও মুঠোফোনের সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়।
বেতদীঘি ইউপি চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ শাহ মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ইটভাটা নিয়ে নথন গ্রামবাসীর কেউ তাকে কোন অভিযোগ করেনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামীম আশরাফ বলেন, ফসলি জমির ওপর ইটভাটা নির্মাণ করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। নথন গ্রামে ফসলি জমিও ওপর ইটভাটা নির্মাণ করে ইট পোড়ানো হচ্ছে এমন তথ্য তার জানা নেই। ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়া হলে মাটির উর্বরা শক্তিও নষ্ট হবে এবং জমিগুলো স্বাভাবিক ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হারিয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ফসলি জমির ওপর অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মাণ করে ইট পোড়ানোর বিষয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে অভিযোগটি তদন্তের জন্য বন বিভাগের ফরেস্টারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে