ফুলপুরে ১০ বছর ধরে টেলিফোন সেবাবঞ্চিত গ্রাহকরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

ফুলপুরে ১০ বছর ধরে টেলিফোন সেবাবঞ্চিত গ্রাহকরা

  • ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ, ২০২০

ময়মনসিংহের ফুলপুরে প্রায় ১০ বছর ধরে টেলিফোন সেবাবঞ্চিত গ্রাহকরা। ইউএনও অফিস, কৃষি অফিস ও বিদ্যুৎ অফিসসহ হাতে গণা

কয়েকটি অফিস ব্যতিত ফুলপুরে আর কেউ টেলিফোন সেবা পাচ্ছেন না। এ অফিসের সেবাবঞ্চিত হয়ে অনেকে এর ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছেন।

জানা যায়, ২০০১ সনের ১২ জুলাই পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ভাষা সৈনিক সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য

মরহুম এম. শামছুল হক ফুলপুর উপজেলা সদরে বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের ৩০০ লাইনবিশিষ্ট ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ-এর শুভ

উদ্বোধন করেন।

তখন এ থেকে টেলিফোন টু টেলিফোন ১০ পয়সা ও টেলিফোন টু মোবাইল ৫০ পয়সা খরচে মানুষ টেলিফোন সেবা পেয়ে আসছিল।

পরে এ অফিস কাক্সিখত সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকেই আর টেলিফোন ব্যবহার করছেন না। দীর্ঘদিন ধরে ওই সেবা থেকে বঞ্চিত জনগণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে, গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টেলিফোন লাইন দীর্ঘদিন ধরে অচল রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন শেখ বলেন, ২০১৩ সনের ১৯ নভেম্বর আমি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই টেলিফোন লাইনটি অচল রয়েছে।

ফুলপুর কাজিয়াকান্দা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জয়নুল আবেদীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের টেলিফোন লাইনটি বন্ধ।

ফুলপুর মহিলা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ তাফাজ্জল হোসেন বলেন, অনেক টাকা খরচ করে মাদরাসায় ও বাসায় টেলিফোন লাইন নামিয়েছিলাম। আনুমানিক ৪/৫ বছর আগে থেকে দুটি লাইনই অকেজো। এ থেকে কোন সেবা আমরা পাচ্ছি না।

ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রওশন আরা বেগম বলেন, লাইনটি বার বার ডিস্টার্ব করতো। পরে কয়েক বছর আগে আমি নিজেই আবেদন করে বন্ধ করে দিয়েছি।

ফুলপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একেএম সিরাজুল হক বলেন, কম খরচে ফোন করার জন্য আমি তিনটি লাইন নামিয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকমত সার্ভিস না দেওয়ায় প্রায় ১০ বছর ধরে আমার টেলিফোন লাইন বন্ধ।

উপজেলা সহকারি প্রোগ্রামার হাবিবুল্লাহ বলেন, উপজেলা টেলিফোন অফিসে কোন জনবল নেই বললেই চলে। আশরাফ ও দুলাল মিয়া নামে দুইজন লাইনমেন ও দুলাল নামে একজন নাইট গার্ড মাঝে মাঝে অফিসটা খোলেন।

বিল করারও কোন লোক তাদের নেই। জুনিয়র এ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার বদরুদ্দিন ফরাজীর নিকট টেলিফোনসেবা সম্বন্ধে জানতে চাইলে ফুলপুরে টেলিফোনসেবার অবস্থা খুবই খারাপ বলে তিনি জানান। অফিসের জানালার গ্রিল ভাঙা। অরক্ষিত অফিসের যন্ত্রপাতি।

চতুর্দিকে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় এ অফিসের ১ একর ৪ শতাংশ ভূমির আংশিক আশপাশের জমিওয়ালা কর্তৃক বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলেও জানা যায়।
টেলিফোনসেবা বিষয়ে বিভিন্ন অফিস ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা টেলিফোন ও ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে জানতে রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলা টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসে গেলে অফিসটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি। পরে ময়মনসিংহ টেলিকমের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী খোকন চন্দ্র দাসের নিকট জানতে চাইলে টেলিসেবার ঘাটতি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, কলেজ ও হাসপাতালসহ দূরের কিছু লাইন বন্ধ আছে।

তবে অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে এসব গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোতে ইন্টারনেট সেবাটা চালু করার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads