জুমের সোনালি পাকা ধানে ছেয়ে গেছে রাঙামাটির পাহাড়। শুরু হয়েছে আউশের জুম ধান কাটা। এবার গত মৌসুমের তুলনায় জুমচাষ বেশি হয়েছে, ধানের ফলনও ভালো। নতুন ধানের গন্ধে পাহাড়ি জনপদগুলোতে তৈরি হয়েছে উৎসবের পরিবেশ।
জুমচাষিরা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর জুমের ফসল ভালো হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক মাস পরিশ্রম করে তারা এবার ভালো ফসল পেয়েছে এবং জুমে ধানের পাশাপশি মিষ্টিকুমড়া, তিল, আদা, হলুদ, ভুট্টা, শিম, মারফা, কাকন, মরিচ, তুলাসহ নানা ধরনের শাকসবজির চাষ করা হয়েছে। জুমের নানা ফলফলাদি পেয়ে বন্যপ্রাণীরাও এখন জুমিয়াদের অতিথি হিসেবে জুমে বিচরণ করছে। সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে আশা করছি পুরো বছর অনায়াসে কেটে যাবে।
জুমচাষি সুনীতি চাকমার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাতের ফলে সময়মতো জুমচাষ সম্ভব হয়েছে। ফলনও হয়েছে আশাতীত। রাঙামাটি সদর উপজেলার বরাদম ইউনিয়নের গোলাছড়ি এলাকার সোনালি চাকমা জানিয়েছেন, গতবারের চেয়ে এবার তার জুমের ফসল অনেক ভালো হয়েছে। মগবান ইউনিয়নের বৌদ্ধ চাকমা তার জুমের ফসল কাটতে কাটতে হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন, এবার আমার জুম থেকে প্রায় ৪০ মণ ধান পাব আশা করছি। একই ইউনিয়নের আরেক জুমচাষি সুমন চাকমা বলেন, দেড় একরের মতো জায়গায় জুমচাষ করেছি। এ ব্যাপারে রাঙামাটির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান, পাহাড়ে জুমিয়ারা স্থানীয় জাতের ধানের পাশাপাশি উচ্চফলনশীল ধান ও সবজির আবাদ করতে চাষিদের পরামর্শসহ যাবতীয় সুবিধা দিচ্ছে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
এ কারণে এবার আগের তুলনায় জুমে ধানের ফলন ভালো হয়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, রাঙামাটি জেলায় এ বছর ৫ হাজার ৯০ হেক্টর পাহাড়ে জুম চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কৃষকরা তাদের জুমে ভালো ফলন পাবে।