এস.এম.নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: 
সাটুরিয়ায় দলিল লেখক ও তার ভাইয়ের সহযোগিতায় প্রতারণার মাধ্যমে জমি লিখে নেয়ার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম। ইউপি মেম্বারের মাধ্যমে ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেন-দরবার চলছে। প্রতারণা ভুলবশত ভাবে হয়েছে বলে দাবি করেন দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম বিশ্বাস। 
এবিষয়ে ভুক্তভোগী পানাইজুরি গ্রামের মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি সাটুরিয়া থানায় দলিল লেখক সহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করার পর থেকে মিমাংসার জন্য দেন-দরবার করা হচ্ছে। 
জানাগেছে, দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম বিশ্বাসের ছোট সাইফুল ইসলাম বিএনপি দলের নেতা। তার ক্ষমতার দাপটে সত্য ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেন-দরবার করছে উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো: শাহাজউদ্দিন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় গত ২৫ জুন মোহাম্মদ আলী ও তার ভাই আব্দুর রাজ্জাক এবং বোন হালিমা বেগম সাটুরিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বি আর ডি বি কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন সহ তার নিকট আত্মীয় সুলতান ও লতিফের নামে ছত্রিশ শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার জন্য আসে। চতুর জয়নাল কৌশলে নিজ নামে একটি এবং সুলতান ও লতিফের নামে আর একটি দলিল মুহুরি শফিকুল ইসলাম বিশ্বাসের সহযোগিতায় সম্পাদন করে। দু'টি দলিল লেখা শেষে দাতাদের কাছ থেকে এবং স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর টিপসহি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদন করে সাব রেজিস্টার অফিসে দাখিল করে। দু'টি দলিলে চল্লিশ শতাংশ করে মোট আশি শতাংশ জমি তফসিলে উল্লেখ করে। ছত্রিশ শতাংশের পরিবর্তে চল্লিশ শতাংশ লেখাতে প্রতিবাদ করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীগনের মধ্যস্থতায় দাতারা দলিলে স্বাক্ষর করে। চল্লিশ শতাংশ জমির দুইটি দলিলে স্বাক্ষর করে। তারা বুঝতেই পারেনি দুই দলিলে তাদের আশি শতাংশ জায়গা প্রতারণা করে স্বাক্ষর নিয়ে নেওয়া হয়েছে। 
পরবর্তীতে সাব রেজিস্টার অভিজিত কর দলিলে ভূল উল্লেখ করে ফেরত দেন এবং নতুন করে সংশোধন করে আনতে বলেন দলিল লেখক শফিকুল ইসলাম বিশ্বাসকে। দলিল ফেরত আসার পর মোহাম্মদ আলী ও অন্যরা জানতে পারেন দুই দলিলে তাদের ৮০ শতাংশ জমি লিখে নিচ্ছেন জমির গ্রহীতারা। মোহাম্মদ আলী প্রতিবাদ করেন আমার কাছ থেকে ৩৬ শতাংশ জমি নেওয়ার কথা। সেখানে ৮০ শতাংশ কেন নেওয়া হলো। প্রচন্ড কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জয়নাল ও শফিকুল ইসলাম দাতাদের বলেন স্বাক্ষর টিপসহি আপনারা দিয়েছেন। এখন দাখিল বাকি সব কাজ শেষ আজ রেজিস্ট্রি হবে না ঈদের পর রেজিস্ট্রি হবে। মোহাম্মদ আলী দলিল ফেরত চাইলে মুহুর ফেরত প্রদানে অস্বীকার করে বলে টাকা বুঝিয়া পাইয়া সই করেছেন আপনার জমির দলিল হয়ে গেছে এ দলিল আপনাকে দেয়া যাবে না বলে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেন। 
মোহাম্মদ আলী তার অতিরিক্ত জমি লিখে নেওয়া এবং দলিল দুটি উদ্ধারের জন্য সাটুরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সাটুরিয়া থানা পুলিশ দ্রুত দলিল দুটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। 
দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, দলিল সম্পাদনের আগে উভয় পক্ষকে দলিল পড়তে বলেছি। আমি নামাজের কারণ একটু তাড়াহুড়ো করেই সাবরেজিস্টাররের কাছে নিয়ে যাই। সাবরেজিস্টার দলিল সম্পাদনা না করে ফেরত দেন। আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল করেনি। ভুলবশত ভাবে হয়েছে।
দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম বিশ্বাসের ছোট ভাই বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছে বলে ফোন কেটে দেন।
ইউপি সদস্য মো: শাহাজউদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা তাকে পাওয়া যায়নি। 
এবিষয়ে সাটুরিয়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, ঘটনা আমি শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। 
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া সাব রেজিস্ট্রার অভিজিত কর বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। এবিষয়ে দলিল লেখক সফিকুল ইসলাম বিশ্বাসকে লিখিত এবং মৌখিকভাবে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। যদি উনি একসপ্তাহের মধ্যে সঠিক ব্যাখার সঠিক জবাব না দিতে পারে তালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
                                
                                
                                        
                                        
                                        
                                        




