মো. শহিদুল ইসলাম:
রাজধানীর সংসদীয় আসনগুলোতে প্রার্থীরা বিভিন্ন রকমের প্রচারণা চালালেও ভোটাদের মনে নেই আনন্দ-উৎসাহ, বিভিন্ন রকমের সংশয় ও ভয় কাজ করছে ভোটারদের মনে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে তো, নাকি ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে সমস্যার সৃষ্টি হবে- এ দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ভোটাররা। অনেক ভোটারের মাঝে চাপা আতঙ্ক কাজ করছে।
ঢাকা জেলায় মোট ২০টি সংসদীয় আসন। তার মধ্যে ঢাকা-১৩ আসনটি মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলানগরের একাংশ নিয়ে সংসদের ১৮৬ নম্বর এ আসনটি। বিশাল এ আসনে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড রয়েছে সাতটি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড এই সংসদীয় আসনের অধিভুক্ত।
মোহাম্মদপুর থানা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১৩ আসনে সর্বশেষ ছয় জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বী করবেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তার মার্কা নৌকা। বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের প্রার্থী মো: কামরুল আহসান। তিনি মার্কা পেয়েছেন ফুলের মালা। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো: জাফর ইকবাল নান্টু। তিনি পেয়েছেন মোমবাতি মার্কা। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)-এর মো: জাহাঙ্গীর কামাল। তার মার্কা টেলিভিশন। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো: শাহাবুদ্দিন। তিনি পেয়েছেন ঘড়ি মার্কা। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো: সোহেল সামাদ বাচ্চু। তার মার্কা একতারা। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৪৩৬।
মোহাম্মদপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স¦তন্ত্র কোনো প্রার্থী নেই। নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্য কারো প্রচারণা চোখে পড়ে না। দলীয়ভাবে শুধু আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানকের পক্ষে জোরে সোরে প্রচারণা চলছে।
অন্য যারা দলীয় প্রার্থী আছেন, তারা এখনো তেমন প্রচারণা চালাচ্ছেন না। মোহাম্মদপুর টাউন হলের দোকানদার শরীফের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলাপ করলে তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন বরাবরের মতো হবে না। দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনের অংশগ্রহণ করছে না। তারা নির্বাচন বর্জন করছে এবং প্রতিহত করার কথাও বলছে। এ জন্য আমরা আতঙ্কে আছি; না জানি নির্বাচনের দিন কী হয়।’ প্রার্থীর জনপ্রিয়তার কথা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ‘এ আসনে এককভাবে নানক ভাই জনপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি এর আগেও এ আসন থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মোহাম্মদপুরের শ্যামলীতে লন্ডিতে কাজ করেন মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। তার কাছে ভোটের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোটের নিয়ে তেমন কিছু ভাবতেছি না; ভাবছি পরিবার নিয়ে। কারণ জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়তেছে তাতে পরিবার নিয়ে চলা মুশকিল হয়ে গেছে। আমাদের এখানে তেমন কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চোখে পড়ে না, শুধু নানক ভাইয়ের নৌকা ছাড়া। মাঝে মাঝে আমরা নৌকার প্রচার-প্রচারণা শুনি।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের রাব্বি নামে একজনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টানা তিনবার ক্ষমতায়। এ জন্য সাধারণ মানুষ অন্য কোনো দল করার সাহস পায় না। তাদের কাছে এখন নৌকা ছাড়া মার্কা নেই। সাধারণ ভোটাররা জানেন এখানে নোকাই জয়ী হবে। তাই অন্য কারো প্রচার প্রচারণায় নামতে চান না। তা ছাড়া দেশের বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না তাই নৌকা ছাড়া কোনো পক্ষ নেই। যা আছে তা নামে মাত্র ।
আদাবরে ওষুধের ফার্মেসিতে কাজ করেন মো. জয়নাল মিয়া। তার সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়। আলাপকালে তিনি বলেন, এর আগে এ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন সাদেক খান। এবার দলীয়ভাবে নানক ভাই মনোনীত প্রার্থী। তিনিই জয় লাভ করবেন বলে আমরা আশা করছি। আমাদের এলাকায় এখনো প্রচারণা খুব বেশি শুরু হয়নি। নানক ভাইয়ের কিছু ব্যানার পোস্টার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচনের বেশ কিছু দিন বাকি আছে, আস্তে আস্তে হয়তো প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে।