পিরোজপুরে কৃষকের মুখে হাসি

পিরোজপুরে চলতি মৌসুমে আমন ধান কাটছে কৃষক

বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

আমনের বাম্পার ফলন

পিরোজপুরে কৃষকের মুখে হাসি

  • এসএম আকাশ (পিরোজপুর) ও জিল্লুর রহমান (মঠবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি, ২০১৯

পিরোজপুরে চলতি মৌসুমে আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ধানের ন্যায্য দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। আমন চাষের মৌসুমজুড়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমন চাষ ও উৎপাদন দুটিই বেশি হয়েছে। জেলায় ৮০ ভাগ ক্ষেতে ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করেছে কৃষকরা। ভালো ফলন ও স্থানীয় বাজারে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৬১ হাজার ৬৫৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৪১ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন, ৯ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে উফশী আমন ও ৪৪১ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড আমন আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে হাইব্রিড আমন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ১৭ টন। উৎপাদন হয়েছে ৫ দশমিক ৫২ টন। হেক্টরে উফশী আমন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ১৭ টন। উৎপাদন হয়েছে ৪ দশমিক ৪৫ টন। স্থানীয় আমন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ দশমিক ২৫ টন। উৎপাদন হয়েছে ২ দশমিক ৭০ টন।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট মাসে আমন ধানের বীজ রোপণ করে ডিসেম্বর মাস থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাসজুড়ে ধান কাটা ও মাড়াই চলবে। বীজ রোপণ থেকে ধান কাটা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর আমনের ভালো ফলন হলেও কৃষকরা ভালো দাম পাননি। অনেকে উৎপাদন খরচও ওঠাতে পারেননি। এ বছর আমন  (মোটা) ধান স্থানীয় বাজারে ৮৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা ও আমন (চিকন) ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত মৌসুম থেকে পিরোজপুরে হাইব্রিড জাতের আলোড়ন, হীরা, এসিআই, অ্যাগ্রোজ জাতের আমন ধান চাষ আবাদ শুরু হয়েছে। হাইব্রিড ধানের ফলন বেশি। এ বছর প্রতি হেক্টরে ৫ দশমিক ৫২ টন হাইব্রিড আমন ধান উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে হাইব্রিড আমন ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে ৫৭ হাজার টাকা। হেক্টরে উৎপন্ন ধান বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছেন এক লাখ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা।

পিরোজপুর সদরের রাজারহাটের ধান ব্যবসায়ী শহিদ সিকদার জানান, এ বছর ধানের দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি। পিরোজপুর সদর উপজেলার পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক সরোয়ার হোসেন খান জানান, গত বছর ধানের মণ ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তখন আমাদের উৎপাদন খরচ ওঠানো যেত না। এবার ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে ধানের মণ বিক্রি করেছি। আমরা ধানের দাম পেয়ে খুশি। মঠবাড়িয়া উপজেলার কবুতরখালী গ্রামের বীরেন কির্ত্তনিয়া (৫৩) জানান, ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেলে সংসারের খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়বে। ধানের বর্তমান বাজারমূল্যে আমরা খুশি। তবে ধানের দাম যেন পড়ে না যায় সেদিকে সরকারের নজর রাখতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পিরোজপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু হেনা মোহাম্মদ জাফর বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকেরা সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় আমর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads