পাবিপ্রবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা : ১০শিক্ষার্থী বহিস্কার

আবাসিক হল ত্যাগ করছে শিক্ষার্থীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

পাবিপ্রবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা : ১০শিক্ষার্থী বহিস্কার

  • পাবনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৬ নভেম্বর, ২০১৮

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি)শিক্ষার্থীদের ৬দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং ১০ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে  ছেলেদের এবং বেলা ১১টার মধ্যে মেয়েদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়ায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে শুরু করেছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক জরুরী সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত প্রদান করে রাতেই ভিসি রাজশাহী চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে আবারোও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সকল শিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের মুক্ত করা হয়। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ দিয়ে মাইকিং করে দুটি হলের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের অনুরোধ করলে বেলা ১১ টার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্ররা হল ছেড়ে বেরিয়ে যায়। শেখ হাসিনা হলের ছাত্রীরা সকাল ৮টার মধ্যে হল ত্যাগ করেন। দুইটি হল সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পাবিপ্রবির জনসংযোগ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৪৭তম জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ নভেম্বর, মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না  দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, আগামী ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে পাবিপ্রবি প্রশাসন।

গতকাল সোমবার সকাল থেকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় ভাইস চ্যান্সেলর প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে বাস ভবনে চলে যান। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসির বাস ভবনও অবরুদ্ধ করে। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের মূল ফটক ও প্রশাসনিক ভবন আটকিয়ে ছয় দফা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছয় দফা দাবি করে আসছি। দাবি মেনে নেবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। অথচ ৩-৪ মাস অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ইতিপূর্বেও আমরা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধারাবাহিকভাবে আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করেছি। প্রতিবার আমাদের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দেয়া হয়েছে’।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষসহ পরবর্তী সকল ব্যাচ সমূহের অর্ডিন্যান্সের আওতাভুক্ত করা, হলের ডাইনিংয়ের খাবার উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি প্রদান, ক্লাস রুম ও চেয়ার সংকট দূর করা, পরিবহন সংকট, ক্যাম্পাসে ওয়াই ফাইয়ের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রোস্তম আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের চেয়ারম্যান ও ডিনদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ জনকে বহিস্কারের বিযয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং এক পর্যায় বহিস্কৃত ১০জনের নাম পরিচয় পাবিপ্রবির জনসংযোগ অধিদপ্তর থেকে জানানো হবে বলে জানান।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads