পানি ফুটাতে বছরে ব্যয় ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস

পানি ফুটাতে বছরে ব্যয় ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস

প্রতীকী ছবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পানি ফুটাতে বছরে ব্যয় ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল, ২০১৯

ওয়াসার পানির মান খারাপ হওয়ায় রাজধানীর ৯১ শতাংশ মানুষ তা ফুটিয়ে পান করেন। পানি ফুটিয়ে খাওয়ার উপযোগী করতে বছরে আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস খরচ হয়। গতকাল বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘ঢাকা ওয়াসা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

ওয়াসার ১০টি জোনের ২ হাজার ৭৬৮ জন ওয়াসার সংযোগ গ্রহণকারী থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ২০.৬ শতাংশ গ্রাহক বছরে সবসময় পানি সরবরাহে ঘাটতির কথা জানিয়েছেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এশিয়ার কোনো দেশে পানি ফুটিয়ে পান করা হয় না। ওয়াসার উচিত বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। চাহিদা অনুযায়ী পানি না পাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি বস্তি এলাকায়। সেখানে ৭১.৯ শতাংশ মানুষ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় ৪৫.৮ শতাংশ, বাণিজ্যিক এলাকায় ৩৪.৯ শতাংশ ও শিল্প এলাকায় ১৯ শতাংশ পানি পান না। সার্বিক সেবাগ্রহীতাদের ৪৪.৮ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সেবাগ্রহীতাদের ৮৬.২ ভাগ ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫.৮ ভাগ দালালকে ঘুষ দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে পানির সংযোগ গ্রহণে ২০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা, পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ৩০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা, মিটার ক্রয়/পরিবর্তন করতে ১,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত বিষয়ে ৫০ থেকে ৩,০০০ টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনে এক থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়।

ওয়াসার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ হয়ে থাকে। এছাড়া বিশেষ ক্ষেত্রে বোর্ডের সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে পদায়ন ও বদলিতে রয়েছে অনিয়ম। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়ম রয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক কাজে সিবিএর অযাচিত হস্তক্ষেপ রয়েছে। 

সেবাগ্রহীতাদের (জুলাই-২০১৭-জুন ২০১৮ সময়কালে) ২৬.৯ ভাগ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং ৬১.৯ ভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ভিশন ও মিশন অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতে করতে ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা ও উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি সেবাগ্রহীতা পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads