পানির অপচয় বড় গুনাহ

পানির অপচয় বড় গুনাহ

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

পানির অপচয় বড় গুনাহ

  • আবু রোকাইয়া
  • প্রকাশিত ২২ জানুয়ারি, ২০১৯

আল্লাহর অপার নিয়ামত পানি। পবিত্র কোরআনের ৪৬টি স্থানে পানির গুরুত্ব বিষয়ে আলোচিত হয়েছে। পানি থেকেই আল্লাহ সমগ্র প্রাণবান বস্তুকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, আর আমি পানি থেকেই সমুদয় প্রাণিকুলকে সৃজন করেছি (সুরা আম্বিয়া-৩০)। মানুষের জীবনধারণের মূল উপাদান পানি। শুধু মানুষের জন্য নয়, উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্যও পানির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তো আকাশ থেকে বারিধারা বর্ষণ করি এবং তা থেকেই উদ্ভিদসমূহের জন্ম হয়, যেগুলোতে তোমরা পশু চারণ করে থাকো’ (সুরা নাহল-১০)। পানির মাধ্যমে আল্লাহ প্রাণবান সবকিছুকে জীবিত ও সজীব রেখেছেন। আবার পানি দিয়ে অবাধ্য জাতিকে ধ্বংস করার শিক্ষণীয় ঘটনাও রয়েছে কোরআনে। জীবন-মরণ এ পানি। এক ফোঁটা পানির অভাবে হারিয়ে যেতে পারে মহামূল্যবান প্রাণ। গ্রীষ্মের খাঁ খাঁ রোদ্দুরে যখন নদী-নালা, খাল-বিল ও মাঠ-ঘাট শুকিয়ে যায় তখন সর্বত্রই পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। তীব্র খরতাপে পানি সংকট দেখা দেয় নগর জীবনে। একটু পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য দেখা যায় নগর-মহানগরে। অথচ এ পানিকেই না আমরা কতভাবে অপচয় করি।

মহান আল্লাহ যে ইবাদতের জন্য আমাদের সৃষ্টি করেছেন পানি হলো সেই ইবাদতের অন্যতম অনুষঙ্গ। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ অন্যান্য ইবাদতের জন্য পানির ব্যবহার সুবিদিত। এক সময় দেখা যেত মানুষ লোটা বা বদনায় পানি নিয়ে অজু করত। ফলে পানির অপচয় হতো না। কিন্তু এখন শহরের এমনকি গ্রামেরও প্রায় সব মসজিদে অজুর জন্য ট্যাপের ব্যবস্থা থাকে। ফলে একজন মুসল্লি অজু করতে গিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে চারগুণ পানি অপচয় করছেন। এ যেন দেহ পবিত্র করতে গিয়ে আত্মাকে অপবিত্র করা।

জীবনের সবক্ষেত্রে অপচয় রোধ ও মিতব্যয়ী হওয়ার তাগিদ রয়েছে কোরআনে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা খাও, পান কর কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না’ (সুরা আরাফ-৩১)। প্রিয় নবী (সা.) এক ‘মুদ্দ’ (প্রায় ১ লিটার বা ৭৯৬ মিলিলিটারের সমপরিমাণ) পানি দিয়ে অজু সারতেন বলে হাদিসে পাওয়া যায়। কেউ যুক্তির খাতিরে বলতে পারেন, মরুভূমি অঞ্চলে পানির সঙ্কট ছিল বলে রসুল (সা.) অল্প পানিতে অজু সারতেন। কিন্তু প্রবহমান নদীর পাশে বসে অজু করলেও মাত্রাতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন প্রিয় নবী (সা.)।

 

লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads