পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সেবা রফতানি

সংগৃহীত ছবি

আমদানি-রফতানি

পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সেবা রফতানি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ নভেম্বর, ২০১৮

অর্থবছরের শুরু থেকেই পণ্য রফতানির আয়ে ইতিবাচক প্রবণতা রয়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ খাতে আয় বেড়েছে ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি আয় হওয়ায় উদ্যোক্তারাও খুশি। এ খুশির মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে সেবা খাতে রফতানি আয় বাড়ার তথ্য। সরকারি প্রতিষ্ঠান রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেবা রফতানি থেকে আয় বেড়েছে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে লক্ষ্যের চেয়ে ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি আয় এসেছে সেবা খাতের রফতানি থেকে।

গতকাল রোববার জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সেবা রফতানি থেকে আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইপিবি। এতে বলা হয়েছে, তিন মাসে সেবা রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১৪০ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৯০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এ হিসাবে তিন মাসে আয় বেড়েছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ ডলার। শতকরা হিসেবে সেবা পণ্যে আয় বেড়েছে সাড়ে ৫৫ শতাংশের বেশি। তিন মাসে সেবা রফতানিতে আয় লক্ষ্যের চেয়ে বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২৫ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তিন মাসের জন্য। এ সময়ে সেবা রফতানিতে লক্ষ্যের চেয়ে ১৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার বেশি এসেছে। শতকরা হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে বেশি এসেছে ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখো গেছে, কম্পিউটার সেবা রফতানির আয় তিন মাসে বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। এ খাতে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার আয় হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ২ কোটি ৯১ লাখ ডলার। সাড়ে ৪ কোটি ডলার লক্ষ্যের বিপরীতে এ আয় এসেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম্পিউটার সেবা রফতানির আয় ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। অবশ্য টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা রফতানিতে আয় ৬২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, তিন মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৯২ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ে  কমিউনিকেশন, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় রফতানি আয় ছিল ৮ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। তিন মাসে এ খাতে ১৩ কোটি ২০ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা রফতানিতে ১৩ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে।

ইপিবি সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের তথ্য নিয়ে পণ্য রফতানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আর সেবা রফতানির পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়ে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে। এ কারণে মাসের শেষে পণ্য রফতানির পরিসংখ্যান তৈরি হলেও সেবা রফতানিতে আয়ের প্রতিবেদন করতে এক মাস বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়। চলতি মাসের শুরুতে অক্টোবর পর্যন্ত পণ্য রফতানির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইপিবি। আর গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সেবা রফতানির তথ্য।

বন্দর এলাকা থেকে বিদেশিরা কোনো পণ্য কিনলে এর দাম সেবা রফতানিতে যোগ হয়। তিন মাসে বন্দরে পণ্য বিক্রি বাবদ রফতানি আয় শতভাগের বেশি বেড়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। আগের অর্থবছর একই খাতে আয় ছিল ১ কোটি ১১ লাখ ডলার। ফলে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০৭ শতাংশ।

পরিবহন খাতে সেবা রফতানিতে তিন মাসে ১১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে আয় হয়েছে ১৯ কোটি ২ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পরিবহন সেবা রফতানিতে আয় ছিল ৮ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। সমুদ্র পরিবহনে তিন মাসে ১৩১ শতাংশ, আকাশপথে ১০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সড়ক পরিবহন সেবা রফতানিতে তিন মাসে আয় বেড়েছে সাড়ে ৬ গুণ। এছাড়া ভ্রমণ খাতে ৬৬ শতাংশ, নির্মাণ খাতে ২৫৬ শতাংশ, সাংস্কৃতিক খাতে ১৯৬ শতাংশ, সরকারি পণ্য ও সেবা রফতানিতে আয় ১৯৫ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। অবশ্য আর্থিক সেবায় রফতানি আয় ৮৫ শতাংশ কমেছে। কমেছে মেধাস্বত্ব ব্যবহার খাতের রফতানি আয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads