একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ৯৬টি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা ইসি সচিবালয় এসব কর্মপরিকল্পনা আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে। আগামী ১৫ অক্টোবর কমিশন বৈঠকে এসব কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শেষে ভোটের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে কর্মপরিকল্পনা আরো আগেই সম্পন্ন করে রেখেছিল ইসি সচিবালয়। কিন্তু কমিশন থেকে না চাওয়ায় এগুলো উপস্থাপন করা হয়নি। কমিশন থেকে এখন কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে এবং এগুলো চূড়ান্ত করতে কমিশন বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সিইসির সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয় শাখাসহ সব বিভাগে কাজ ভাগ করে এক সপ্তাহের মধ্যে ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নসূচি’র চূড়ান্ত কপি কমিশনে উপস্থাপনের কাজ চলছে।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসিতে মতভিন্নতা ও কর্তৃত্ব নিয়ে অসন্তোষের মধ্যে দেড় মাস ধরে কোনো বৈঠক হয়নি। সর্বশেষ গত ৩০ আগস্ট কমিশন সভা বসেছিল আরপিও সংশোধন নিয়ে। সেই সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সভা বর্জন করেছিলেন। পরে তিনি নোট অব ডিসেন্ট পঠিয়ে দেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এখন আর বসে থাকার ফুরসত নেই কমিশনের। তাই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইসির উপসচিব (সংস্থাপন) মো. মঈন উদ্দীন খান স্বাক্ষরিত বৈঠকের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘১৫ অক্টোবর সকালে ৩৬তম কমিশন সভা হবে। এর অন্যতম আলোচ্যসূচি হচ্ছে- একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ।’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কমিশন সভায় ভোটের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। অন্তত ৯৬টি কর্মপরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন সূচির লক্ষ্যমাত্রা কমিশনকে অবহিত করা হবে। তবে এই ৯৬ কর্মপরিকল্পনায় কী আছে সে বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ তারা। একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এসব পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই কমিশন বৈঠকের আগে এসব নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়ার পরই কেবল কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা যাবে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এরই মধ্যে অবশ্য জানিয়েছেন, ভোটের প্রস্তুতির প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। যথাসময়ে তা কমিশনকে জানানো হবে। কোনো দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে একটা সময় ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে, এরপর যেকোনো সময় তফসিল করতে পারে কমিশন। ইসির প্ল্যান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার।
সংবিধান অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির সামনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর আগে ডিসেম্বরে এ নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছিলেন। ইসি সচিব এ বিষয়ে বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে ৫ জানুয়ারি (২০১৪) ভোট হয়েছিল। এখন তো ১ জানুয়ারি বই বিতরণ, একাডেমিক বর্ষ শুরু হয়। সাধারণত ডিসেম্বরের শেষে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহূত হয়। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।