একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয়েরে জন্য দলটিকেই দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি শুধু নিজেদের জন্যই মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে, এখানে আমাদের কোনো দোষ নেই।’
সোমবার নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আওয়ামী লীগ প্রধান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য ও তাদের মনোনয়ন নিলাম করেছিল। যার ফলে নির্বাচনে জয়লাভ করার ভালো সুযোগ থাকা অনেক যোগ্য প্রার্থী বাদ পড়ে যান।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগামী পাঁচ বছর সরকারের অগ্রাধিকার হবে যেসব কর্মসূচি ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে সেগুলো শেষ করা। ‘আমরা বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন করেছি, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।’
তবে তিনি বলেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এবিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকেরা বিএনপি-জামায়াতের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ‘তারা আমাদের লোকদের ওপর হামলা করেছে, ব্যালট পেপার ও বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে, তারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণ এ ব্যাপারে খুব সজাগ ছিল। যে কারণে তারা সফল হতে পারেনি।’
একাদশ সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, দলটি নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে কিছু করেনি। তাদের অল্প কয়েকজন প্রার্থী সক্রিয় ছিলেন, সবাই নয়। বিষয়টি ক্ষমতাসীন দলকে অবাক করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট শুধু অংশ নিয়েছে এবং তারা দেখাতে চায় যে নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ছিল না অথবা তাদের মনে অন্যকিছু আছে। ‘কারণ ষড়যন্ত্র করাই তাদের চরিত্র।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, নির্বাচনে জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট দ্বিধায় ছিল। ‘এটা স্পষ্ট ছিল না, যা আরেকটা কারণ যে মানুষ তাদের ভোট দেয়নি।’
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু ঘটনা ঘটেছে। বিরোধীদের হাতে আমাদের দলের কয়েকজন কর্মী নিহত হয়েছেন। আমি তার জন্য খুবই দুঃখিত। কিন্তু আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনগণের প্রশংসা করি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে।’
নির্বাচনের ফল নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে রায় পেয়েছে তা দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সরকারের জন্য এক ভালো সুযোগ। ‘কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমাদের দেশের জন্য খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
ভোট শুরুর আগেই ব্যালট পেপারপূর্ণ বাক্স নিয়ে বিবিসির এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা উল্টো জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কী পড়ে দেখেছেন যে এটা কোন ব্যালট বাক্স। ‘এটা এই নির্বাচনের সময়ের নয়, এটা আগের নির্বাচনের। আমার মনে হয় এটা ছিল মেয়র নির্বাচনের, যখন গণনার জন্য ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। এখানে এমন কিছু হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি না।’
বিবিসিতে সম্প্রচারিত ভিডিওটিকে বানোয়াট ও এতে পুরনো ছবি রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘যদি অভিযোগ থাকত তাহলে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্র বাতিল করত।’