নির্বাচনের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ হয়েছে

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

ইসলামী আন্দোলনের অভিযোগ

নির্বাচনের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ হয়েছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসন, একতরফা এবং পুলিশ ও র্যাবের পাহারায় ভোট ডাকাতির মহোৎসব হিসেবে বর্ণনা করেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল দুপুর ২টায় রাজধানী পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব এটিএম হেমায়েতউদ্দীন। তবে ভোট নিয়ে দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লাঙ্গল মার্কায় সিল দেওয়া দুটি ব্যালট পেপার দেখিয়ে মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী দাবি করেন ১টা ১৫ মিনিটের দিকে শ্যামপুরের বাকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারদলীয় লোকজন শতাধিক কেন্দ্র দখল করে সিল মারতে থাকে। সেখানে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশ তাদের বাধা দেয়নি। আমি সেখানে দুটি ব্যালট কুড়িয়ে পেয়েছি, যেখানে দেখা যাচ্ছে  লাঙ্গলে ভোট দেওয়া। এ কারণে আমি নির্বাচন বর্জন করছি।

সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব এটিএম হেমায়েতউদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, সারা দেশে নির্বাচনের নামে যে তামাশা হচ্ছে, তাতে আমরা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। অধিকাংশ আসনে ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই আমাদের সব এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে একতরফা সিল মারা হয়। এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক ভোটার শেষ পর্যন্ত তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।

এ সময় নির্বাচনে বিভিন্ন জেলার অনিয়ম তুলে ধরেন মহাসচিব এটিএম হেমায়েতউদ্দীন। তিনি দাবি করেন, হাতপাখার অধিকাংশ এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। হাতপাখার ভোটারকে প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ব্যালট পেপার অনেক জায়গায় ১১টার আগেই শেষ হয়ে যাওয়া, হাতপাখার ভোটারসহ সব ভোটারকে নখে কালি মাখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ব্যালটে নৌকায় সিল মেরে বাক্সে ফেলা, হাতপাখার প্রার্থীদের সব অভিযোগ গ্রহণ না করা/অস্বীকার করা, হাতপাখার এজেন্টদের ওপর হামলা ও ঢাকা-৬ আসনসহ দেশের কয়েকটি আসনে হাতপাখার কর্মী গুম।

সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, চাঁদপুর-১ আসনে হাতপাখার প্রার্থীর ওপর হামলা করা হয়। তার গাড়ি ভাঙচুর করে সহযোগীদেরও আহত করা হয়। দিনাজপুর-৪ আসনে রশিদুল নামের এক এজেন্টকে পুলিশ আটক করেছে। নীলফামারী-৪ আসনে বেলা ১১টায় হাতপাখার সব এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়। বগুড়া-৩ আসনে ইউএনও’র সামনে পৌর মেয়র বেলালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রার্থীর গাড়ি নিয়ে যায়। নাটোর-১ আসনের দুই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার না দিয়ে ভোটারদের হাতে কালি লাগিয়ে বের করে দেওয়া হয়। নোয়াখালী-২ আসনে ১০৩ কেন্দ্রের সব কয়টি  দখল করে নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারা হয়। চাঁদপুর-৩ আসনে ৩ নম্বর কল্যাণপুর ইউনিয়নে ছাত্রলীগের হামলায় হাতপাখার পাঁচ কর্মী আহত হন। শেরপুর-১ আসনে সব কেন্দ্রের এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার এ ব্যাপারে অভিযোগ গ্রহণ করেননি। দেশের সব আসনের একই চিত্র বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফজলে বারী মাসউদ, ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী আবুল কাশেম, গণমাধ্যম সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads