• সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ | ১৭ চৈত্র ১৪৩১ | ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬
নিজেদের মানুষ হিসেবে মেলে ধরার দায়িত্ব নারীরই

প্রতীকী ছবি

মুক্তমত

নিজেদের মানুষ হিসেবে মেলে ধরার দায়িত্ব নারীরই

  • প্রকাশিত ১৩ এপ্রিল, ২০২১

নারীর আজকের এ অবস্থানে যাওয়ার চিত্র আমি ইতিবাচকভাবেই মূল্যায়ন করতে চাই। আজকের এ অবস্থানে আসতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে নারীকে। শহরেই আমার জন্ম। ছোটবেলায় দেখতাম, একজন নারী রিকশায় উঠলে চারপাশে আলাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হতো। প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে একজন নারী রাস্তায় বের হতেন। ঘরের বউ বাবার বাড়ি নাইওরি গেলে বাড়ির মহিলারা তার সুটকেস, ব্যাগ তল্লাশি করত। কী ভয়ংকর কথা! হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা লজ্জাজনক অধ্যায় দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। বিয়ের পর প্রথম মাসিক হওয়ার অনুষ্ঠান করে বউয়ের সতীত্ব পরীক্ষা করা হয়। একসময় দেখতাম সোমত্ত ঘরের মহিলারা কাজের লোকদের দিয়ে ঘরবাড়ি এমনভাবে সাফসুতরা করাতেন; এতে ওই কাজের মানুষটার প্রাণ যায় যায় অবস্থা হতো। কাছে দাঁড়িয়ে কাপড় ধোয়াতেন। মাথার ওপরে ভেজা ভারী কাপড় উঠিয়ে আছাড় দিতে হতো। কত জোরে আছাড় দিচ্ছে সেটা দেখে তারা বোধ হয় আনন্দ পেতেন! ঘরের বউঝিরা পিঠা বানাতেন। নাম হতো তাদের। কিন্তু পিঠা বানাবার মূল উপাদান হাতের তৈরি আতপ চালের গুঁড়া করে দিত ঘরের কাজের মেয়েটি। শুধু সামান্য কিছু টাকার জন্য অমানবিক পরিশ্রম করত তারা। এখনো করছে।

নারী এখন ব্যাংকে, বিমানবাহিনীতে, সচিবালয়ে, আদালতে, রাজনীতিতে, কোথায় নেই? বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের এগিয়ে যাওয়ার গল্পে আমি আনন্দ অনুভব করি, আশান্বিত হই। দেশের প্রায় সব শহরের গলির মধ্যেও আজ একজন নারী ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে চা বিক্রি করছেন। গ্রামের হাজারও নারী স্রোতের মতো এসে গার্মেন্ট শিল্পে যোগ দিচ্ছেন। গ্রামের অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত মেয়েরা শহরে এসে এভাবে কর্মমুখর হয়ে উঠবেন, তা এক সময় কল্পনাও করা যেত না। গার্মেন্টের মেয়েদের অবজ্ঞা করে, অবহেলা করে ‘গার্মেন্ট পার্টি’ বলা হয়। আমার তাতে ভীষণ আপত্তি। তাদের শ্রমেই দামি গাড়িতে চড়ছি। অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। এমনকি গ্রাম থেকে শহরে এসে যে নারীরা ‘কাজের বুয়া’ হিসেবে কাজ করছেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, উপার্জন করছেন, তিনি অনেক বেশি সংগ্রামী, প্রত্যয়ী। যৌনদাসীর চেয়ে তারা অনেক মর্যাদা নিয়ে বাঁচুক।

উচ্চবিত্ত মহিলাদের দেখি যারা শুধু পুরুষকে অবলম্বন করে বাঁচে। যাদের সারাদিন কাটে শপিং সেন্টার আর চ্যানেলে চ্যানেলে সিরিয়ালের সাজগোজ, কূটনিপনা দেখে। এদের উৎপাদনের সঙ্গে কোনো যোগ নেই। এরা নিজেকে সম্পূর্ণ মানুষও ভাবতে পারে না। ভাবে আমি ‘মেয়েমানুষ’। এই নারীদের চেয়ে ওই যে বললাম গার্মেন্ট, যে মেয়েরা নিজেকে মানুষ ভাবে, শ্রম করে, উপার্জন করে তারা মানুষ হিসেবে অনেক বেশি সম্মানিত। নারী-পুরুষ মিলিয়েই সমাজ। নারীর এগিয়ে যাওয়া আমি পুরুষের সঙ্গে তুলনা করতে চাই না। পুরুষের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত বাধা থাকে না। পুরুষ এগিয়ে যাবে, পুরুষ অর্জন করবে, তার সব কাঠামো সমাজই তৈরি করে রেখেছে। কিন্তু একজন নারী এগিয়ে যেতে চাইলে, তাকে পেছন থেকে টেনে রাখার সব বন্দোবস্তই করা হয়। অর্থাৎ একজন নারী পুরুষের সমপথে হাঁটতে চাইলে তাকে দ্বিগুণ শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। নারীর শত্রু আসলে পুরুষ নয়, মূলত পুরুষতান্ত্রিকতা। পুরুষতান্ত্রিকতাই নারীর প্রধান শত্রু। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা শুধু যে একজন পুরুষের মধ্যেই থাকে, তা নয়। কখনো কখনো নারীর মধ্যেও পুরুষতান্ত্রিকতা প্রকটভাবে থাকতে দেখা যায়। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব চেতনা আছে, বোধ আছে। এখানে দুই ধরনের বাধার বলয় কাজ করে। একটি সমাজ নির্মিত, তার চারপাশে হাজারও বাধা, যাতে সে এগিয়ে যেতে না পারে। আরেকটি বাধা তার কেন্দ্র থেকে, নিজের মধ্য থেকে এক ধরনের বাধার বলয় তৈরি করে। নিজেকে পিছিয়ে রাখা, নিজের মধ্যে পিছিয়ে পড়ার মানসিকতা উৎপন্ন হয়। কখনো কখনো নারী আত্মঘাতী হয়। তার এই আত্মঘাত আমাকে হতাশ করে।

নারী পরনির্ভরতার জন্য নিশ্চয়তা চায়। দেখা যায়, জেলখানার অনেক কয়েদি জেলে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তারা জেলের মধ্যেই এক ধরনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। থাকতে পারছে, খেতে পারছে, এটিই তাদের কাছে এক ধরনের নিরাপত্তা বলে মনে হয়। পশ্চিমা বিশ্বে শিক্ষায় নারীর অগ্রগতি ঘটেছে বহু আগে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক বলয় থেকে তো বের হতে পারল না। পুঁজিবাদ ও পুরুষতান্ত্রিকতা হাত ধরাধরি করে হাঁটে। পশ্চিমের পুঁজিবাদী কাঠামো নারীকে পণ্য হিসেবেই দেখে। সেখানেও নারী হয়ে ওঠে ‘সেলিং প্রডাক্ট’। পুঁজিবাদ পুরুষতান্ত্রিক, ফলে সেখানেও নারীর মুক্তি মেলে না। সে পতিতা হয়, পর্নো ভিডিওর মডেল হয়, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় পোশাক খুলে দাঁড়ায়, যৌনবাণিজ্যের উপচার হয়। পুঁজিবাদ নারীর দেহকে পণ্য করে যতটা কেনাবেচা করতে পারে, মুনাফা অর্জন করতে পারে, তার সবটুকুই করা হয়। নারীর স্বাধীনতা মানে পুরুষের সাথে বিছানায় যাওয়াটাই বোঝে অনেক মেয়ে। এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে দেশ বা স্থানভেদে নারীর মুক্তির মাপকাঠি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। স্বাধীনতা বা সচেনতার প্রশ্নে সুইডেনের একজন নারী যেভাবে মূল্যায়িত হবেন, সোমালিয়া বা সৌদি আরবের একজন নারী সেভাবে মূল্যায়িত হবেন না। পত্রিকায় ‘মেয়েদের পাতা’ মানেই রূপচর্চা আর ঘরসজ্জা। চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত কীভাবে সাজাবেন তার বিশদ বর্ণনা। টেলিভিশনে সংবাদপাঠকের চেয়ে সংবাদপাঠিকা বেশি। তথ্য চাহিদার চেয়ে পুরুষ দর্শকের অন্য চাহিদা মেটাতে মিডিয়া অধিকমাত্রায় ব্যস্ত। রূপহীন কোনো মেয়ে শত মেধাবী হলেও মিডিয়া তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করে না, করে শরীরসর্বস্ব অমেধাবীদের। নারীর প্রতি সহিংসতার বেশিরভাগই ঘটে থাকে কোনো না কোনোভাবে যৌনতাকে কেন্দ্র করে। নারীর প্রতি সকল নির্যাতনই ঘুরেফিরে যৌন নির্যাতনে গিয়ে দাঁড়ায়। শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, অঙ্গচ্ছেদ এমনকি মানসিক নির্যাতনও মূলত যৌনতাকে কেন্দ্র করে ঘটে থাকে। দেখা যায় নারীকে নিয়ে যত গালাগাল আছে তা সবই কোনো না কোনোভাবে যৌনতাকেন্দ্রিক। নারীকে ভাবাই হয় সেক্সুয়াল অবজেক্ট হিসেবে। এ কারণে নির্যাতনের সময় নারীর যৌনস্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে নির্যাতন করা হয়। কত কত আইন আছে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে। কিন্তু বন্ধ কি হয়েছে? তার মানে নারীকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন না করলে, কখনোই নির্যাতন বন্ধ হবে না।

ধর্মই নারীকে পিছিয়ে দেওয়ার একমাত্র কারণ আমি তা মনে করি না। নারীকে পিছিয়ে দেওয়ার অনেক কারণের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি একটি মাত্র কারণ হতে পারে। ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে বহু আগে। তখনকার প্রেক্ষাপট আর আজকের প্রেক্ষাপট এক কি না, তা আমলে নিতে হবে। আজ থেকে দুই হাজার বছর আগের সময় তো এখনকার সঙ্গে মিলিয়ে মূল্যায়ন করলে হবে না। নারী সুযোগ পেয়েও অনেক সময় মত প্রকাশ করে না। তখন তো ধর্ম বা অন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। সে নিজেই নিজের চিন্তার জায়গাটাকে খাটো করে রাখছে। এ জন্য পরিবর্তন চাইতে হলে সবার আগে নিজের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। চাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধতা থাকলে কখনো পরিবর্তন আসে না। সবার আগে পরিবর্তনের উদাহরণ হতে হয় নিজেকে। অনেকে পর্দা নিয়ে কথা বলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, পর্দার ব্যাখ্যা নিয়ে। পর্দা বলতে কী বোঝাতে চান? কালো হাত মোজা, পা মোজা, চোখ-মুখ কালো কাপড়ে সম্পূর্ণ ঢেকে রাখা কখনো পর্দা হতে পারে না। সম্ভবত ধর্মও এমন পর্দার কথা বলেনি। এমন পর্দায় একজন নারীর চলাফেরায় ঝুঁকি বাড়ায়। মনের শালীনতাই হচ্ছে একজন মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় পর্দা। আমরা কেবল নারীর পর্দার প্রসঙ্গে কথা বলি। ধর্মে পুরুষেরও পর্দার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোথাও পুরুষের পর্দা প্রসঙ্গ উচ্চারিত হতে শুনি না। সময় বদলাচ্ছে। চিন্তার জগৎও বদলাচ্ছে। নারীর পর্দা নিয়েও পরিবর্তনের ধারা আসছে। অনেক নারীই পর্দা থেকে বেরিয়ে আসছেন। কিন্তু বেরিয়ে আসলেই কি স্বাধীন হতে পারছেন?

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। অনেকেই মনে করেন, খোলামেলা পোশাক পরলেই সে আধুনিক। এটি অসম্ভব ভুল ধারণা। স্বাধীনতা মানুষের পোশাকে নয়, স্বাধীনতা মেলে চিন্তায়। নারী বা পুরুষে নয়, চিন্তার দৈন্য থাকলে হাজারও হাল ফ্যাশনের পোশাক পরিধান করে লাভ নেই। ট্রেন্ডি পোশাক পরা মানেই সে আধুনিক, অমনটা ভাবা বোকামি। যে মানুষের মধ্যে মুক্তচিন্তা নেই, যুক্তি নেই, মানবিকতা নেই, বিজ্ঞানমনস্কতা নেই সে-ই পিছিয়ে পড়া মানুষ। পোশাক মানুষকে আধুনিক করতে পারে না, যদি না সে চিন্তাচেতনায় আধুনিক হয়। পোশাকে খোলামেলা হলেই একজন নারীর মনের জানালা খুলে যাবে তা মনে করার কারণ নেই। আত্মবিশ্বাসের জায়গা, চিন্তার জগৎ প্রসারিত না হলে টিশার্ট বা জিন্স পরলেই একজন নারী স্বাধীন বা আধুনিক হতে পারেন না। অনেক স্লিভলেস, স্বল্পবসনা মেয়েদের দেখেছি পার্টিতে যেতে, তারা ডিসকোতে যাচ্ছে, এর ওর বাহুলগ্ন হয়ে বেড়াচ্ছে কিন্তু ভেতরে ভেতরে ভীষণ পুরুষতান্ত্রিক, অনাধুনিক। নারীবাদী হিসেবে একজনের পরিচয় তুলে ধরা আসলে জরুরি কোনো বিষয় নয়। আমি মনে করি, মানুষ মানবতাবাদী হবেন। যে-কোনো মানুষই নির্যাতনের শিকার হলে, তার পক্ষ অবলম্বন করাই হচ্ছে মানবিকতা। দেখা যায় গৃহকর্মীর সাথে কোন পুরুষ যদি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়; বাড়ির মহিলারা নারীকেই দোষারোপ করেন। পুরুষ যেন ধোয়া তুলসীপাতা। সমস্যা হচ্ছে, আমরা তো নারীকে মানুষই মনে করি না। নারী ও নারীবাদকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর।

অনেকেই মনে করেন, পুরুষ সিগারেট খায়, মদ খায়, তাহলে আমি নারীবাদী আমিও মদ খেতে পারি। পুরুষ অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে ঘুরে বেড়ায়। তাই নারীকেও ঘুরে বেড়াতে হবে। মদ খাওয়া, সিগারেট খাওয়া নারী-পুরুষ যে কারো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এর সঙ্গে নারীবাদের কী সম্পর্ক থাকতে পারে? পুরুষের খারাপ অভ্যাসকে আমলে নিয়ে প্রতিযোগিতা করে আসলে নারীবাদী হওয়ায় কোনো মুক্তি মেলে না। আমাদের তথাকথিত নারীবাদীদের মানসিক উচ্চতা এই ‘পুরুষ পর্যন্তই’, যা খুবই দুঃখজনক। পুরুষের সমকক্ষ হওয়ার মধ্য দিয়ে নারীবাদী হওয়া যায় না। ভেতরের মানুষ আর বাইরের মানুষ এক নয়। প্রচুর শপিং করছে, প্রচুর মেকাপ নিচ্ছে, ফেসবুকে সেলফি দিচ্ছে, মনে হয় খুব সুখী মানুষ, আসলে তা নয়। অন্তর্গত বেদনা ঢাকতেই তার অতিরিক্ত শপিং, মেকাপ, সঙ্গীকে নিয়ে সেলফি। লক্ষ করলে দেখা যায়, অনেক মডেল মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এখন মনে হতেই পারে-একজন মডেল অনেক বেশি খোলামেলা,  হাঁটছেন অর্ধনগ্ন হয়ে, তিনি কেন আত্মহত্যা করছেন? তিনি হয়তো খোলামেলা হয়ে হাঁটছেন, কিন্তু ভেতরের দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতি তীব্র। তার নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস নেই। তার বাইরের জীবন, ভেতরের জীবনের হিসাব মেলাতে পারেন না। বাইরে পোশাকি জীবন থাকলেও ভেতরে ভেতরে সে দুর্বল মানুষ। মেয়েদের বেশিরভাগ আত্মহত্যাই পুরুষকে জড়িয়ে। পুরুষ তাকে ভালোবাসল কি বাসল না, বিশ্বাস করল কি করল না, অন্য নারীর সঙ্গে জড়ালো কি জড়ালো না, এই বৃত্তেই তার চিন্তার জগৎ। এ জগৎ বড় দৈন্য। জীবনে বাঁচতে হলে আগে নিজেকে ভালোবাসতে হয়। নিজেকে নিজে না ভালোবাসলে, না সম্মান করলে, জগতে কেউ করবে না।

পুরুষ আমার জগৎ নয়, জীবন নয়, নিজের জীবন-জগৎ হতে হয় নিজেকে। সেই সমাজেই আমার জন্ম, যেখানে অহরহ ফিমেল ফিটিসাইড ঘটছে। ভ্রূণ হত্যা হচ্ছে। মাতৃগর্ভে মেয়ে ভ্রূণ, তাকে হত্যা কর। সন্তান জন্মের আগেই বাবা-মা ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করছে। ছেলে ভ্রূণ না মেয়ে ভ্রূণ। পুরুষ হলে ভ্রূণ বাঁচিয়ে রাখার শত চেষ্টা করা হয়। নারীকে মেনে না নেওয়ার এই যে প্রবণতা, তা কেবল সমাজকে পিছিয়েই রাখে। নারী আর পুরুষ হচ্ছে প্রকৃতির বৈচিত্র্য। নারী না বাঁচলে পুরুষের জন্মও বন্ধ হয়ে যাবে। নারীরা  সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে পুরুষকেও। এ কারণেই নারীর অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী হই।

লেখক :লতিফা  নিলুফার  পাপড়ি

শিক্ষক ও সাহিত্যিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads