আশ্চর্য হলেও সত্য যে, বিংশ শতাব্দীর আগে কোনো দেশেই নারীদের ভোটাধিকার ছিল না। তবে উনিশ শতকের শেষদিকে এসে ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, সুইডেন, কিছু অস্ট্রেলীয় উপনিবেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যের নারীরা সীমিত আকারে ভোটের অধিকার অর্জন করেন। গণতন্ত্রের শুরু যে দেশ থেকে, সেই গ্রিসেও নারীদের কোনো ভোটাধিকার ছিল না। সেখানে ভোট দিতে পারতো শুধু জমির মালিক ও পুরুষরা। ইউরোপ-আমেরিকায় যে আধুনিক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ, সেখানেও নারীরা ভোটাধিকার পেয়েছে মূলত বিংশ শতাব্দীর শুরুতে। বিশেষ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা দেখে অনেক দেশ নারীদের ভোটাধিকার দিতে বাধ্য হয়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ইউরোপে ফিনল্যান্ডে সর্বপ্রথম নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করে এবং ১৯০৭ সালে ফিনীয় নির্বাচনে নারীরা প্রথমবারের মতো সংসদে নির্বাচিত হন। ১৯১৩ সালে নরওয়ে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার প্রদান করে। দুই বিশ্বযুদ্ধ-মধ্যপর্তী পর্বে বেশিরভাগ স্বাধীন রাষ্ট্র নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করে। কানাডা ১৯১৭ সালে, যুক্তরাজ্য ১৯১৮ সালে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯২০ সালে। তবে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে নারীদের ভোটাধিকার দেরিতে প্রদান করা হয়। স্পেনে ১৯৩১ সালে, ফ্রান্সে ১৯৪৪ সালে, ইতালিতে ১৯৪৬ সালে, গ্রিসে ১৯৫২ সালে, সুইজারল্যান্ডে ১৯৭১ সালে নারীরা ভোট দেওয়ার অধিকার পায়। লাতিন আমেরিকার সিংহভাগ দেশ ১৯৪০-এর দশকে নারীদের ভোট প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে। বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার কিছু মুসলিম দেশে নারীদের ভোটাধিকার থাকলেও এখনো মধ্যপ্রাচ্যের অনেক ইসলামিক দেশে নারীদের ভোটাধিকার নেই। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে নারীরা প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। এখনো অনেক দেশে নারীদের ভোট দেওয়ার জন্য আলাদা লাইনে দাঁড়াতে হয়।





