রাজধানীর অদূরে ধামরাই উপজেলা। এটি ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। সংসদীয় আসন হিসেবে ঢাকা-২০ আসন হিসেবে পরিচিত। এক সময় রাজনৈতিকভাবে এ আসনটি ছিল বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এখন বিএনপির সেই উর্বর ভূমি নেই। যেভাবেই হোক আসনটি এখন আওয়ামী লীগের দখলে। এ আসনে স্বাধীনতার পর মুসলিম লীগ থেকে একবার, জাতীয় পার্টি দুইবার, বিএনপি চারবার ও আওয়ামী লীগ থেকে তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে একেবারে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। একদিকে বিএনপি বেহালদশা, অন্যদিকে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে থানা ও পৌর কমিটি বিলুপ্ত করায় ধামরাইয়ে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে দলটি।
জানা গেছে, বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শক্তিশালী হলেও ধামরাইতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি গত দেড় যুগে। ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান এমপি থাকাকালে (২০০৬ সাল পর্যন্ত) বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হলেও ভোটের অঙ্কে বিএনপির কমতি ছিল না। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে বিএনপির হাল ধরেন তিনবারের উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন। তিনি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি বিগত কয়েকটি নির্বাচনে। যারা ধামরাইয়ের বিএনপি নিয়ে মাথা ঘামায় আর যাদের ওপর নির্ভর করে বিএনপির নেতৃত্ব তাদের কাউকে সদ্য সমাপ্ত (২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত) পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জুর পক্ষে প্রচারে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তন্মধ্যে চারবারের সাবেক এমপি খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, উপজেলা পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান থানা বিএনপির সভাপতি তমিজ উদ্দিন, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুর রহমান খান ফরহাদ ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু তাহের মুকুটকে দেখা যায়নি। সর্বোপরি ঢাকা জেলার বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাককে একদিনের জন্যও ধামরাই পৌর নির্বাচনে দেখা যায়নি। এরপরও পৌর নির্বাচনে অসহযোগিতার অভিযোগে থানা ও পৌর নেতাদের ওপর দোষ চাপিয়ে কমিটি ভেঙে দেন জেলা কমিটি। ঢাকা জেলার ১০টি সাংগঠনিক ইউনিটের মধ্যে একমাত্র ধামরাই থানা ও পৌর কমিটি ১১ জানুয়ারি বিলুপ্ত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আহ্বায়ক কমিটি গঠন না করায় নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে ধামরাই বিএনপি। এমনিতেই ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান ও তমিজ উদ্দিনের দ্বন্দ্বে দ্বিধাবিভক্তে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে বিএনপি। এরমধ্যে আবার কমিটি বিলুপ্তি।
এ বিষয়ে সদ্য সাবেক সভাপতি তমিজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, পৌর নির্বাচনে যে নেতাদের একদিনের জন্য পাশে পাওয়া যায়নি। তারাই আবার বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধামরাই থানা ও পৌর কমিটি বিলুপ্ত করেছে।