ঢাকার ধামরাইয়ে কিশোর গ্যাংয়ের তান্ডবে যাদবপুর বি এম স্কুল এন্ড কলেজ এর দরজা জানালা ভেঙে দিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের মুলহোতা জামিল গ্রুপের সদস্য। এই ঘটনায় যাদবপুর বি এম স্কুলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন যাদবপুর বি এম স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী হায়দার।
তিনি বলেন, গতকাল মারধরের ঘটনায় স্কুলের ছাত্রদের ডেকে ক্লাশরুমে নিয়ে জিজ্ঞাসা করছিলাম। পরে তাদের অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার চাইলে তারা ভুল নম্বর দেয়। এই জন্য তাদের ক্লাশরুমে রেখে পিয়নের মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে আনার কথা বলে ক্লাশ থেকে অফিসরুমে আসি। কিছুক্ষণ পর জামিল, রিপন, শিপন রাম-দা, লাঠি সোটা নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে প্রতিটা ক্লাশরুমে ডুকে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। অবস্থার বেগতিক দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা
আহত হলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে সোমবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১১ টার সময় যাদবপুর ইউনিয়নের যাদবপুর বি এম স্কুল এন্ড কলেজে এমন ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশের টের পেয়ে আগেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা।
অভিযুক্তরা হলো-জামিল হোসেন, রিপন হোসেন, শিপন হোসেন, মারুফ হোসেন। তারা সকলেই বহিরাগত সন্ত্রাসী। তাদের সহযোগিতায় যাদবপুর স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ রাব্বি, ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ হাসিবুল হাসান, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মোতালেব মোল্লা, ৯ম শ্রেণী ছাত্র আশিক হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র কাজী মোজাম্মেল হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ আলহাজ্ব হোসেন,দশম শ্রেণীর ছাত্র আসিফ হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ সিফাত হোসেন,দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ ইকবাল হোসেন, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ আশিক হোসেন, নবম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ সোহান নামে শিক্ষার্থীরা জামিলের নেতৃত্বে স্কুলে ভাঙচুর করেন। তাদের কাছ থেকে দুটি রামদা, একটি শাবল, প্রচুর বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।
স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সুত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন আগে রিপন নামের বহিরাগত ছেলেটি ভোরাইল গ্রামে একটি মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে যুবরাজ নামে যাদবপুর স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রসহ গ্রামের লোকজন তাদেরকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেয়। পরে রিপনের
অভিভাবক ডেকে সেটা বিচারের মাধ্যমে শেষ করে। তারই জের ধরে গতকাল রবিবার দুপুরে ভোরাইল গ্রামের ছাত্র যুবরাজসহ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করে জামিল গ্রুপের ছেলেরা। এই সংবাদ পেয়ে যাদবপুর বি এম স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী হায়দার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের ডেকে ক্লাশরুমে বসিয়ে রাখেন। পরে তাদের কাছে প্রত্যেকের অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার চায়। এই সময় তারা তাদের অভিবাবকের সঠিক নাম্বার না দিয়ে ভুল নম্বর দেয়।
এরপর প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে পিয়ন পাঠিয়ে অভিভাবকদের খবর দিতে গেলে ক্লাশের ছাত্ররা জামিলকে খবর দিলে জামিল তার বাহিনী নিয়ে স্কুলে ডুকে প্রতিটা ক্লাশের দরজা জানালা ভেঙে ছাত্রদের বের করে নিয়ে যায়। দরজা জানালা রাম-দা দিয়ে কুপানোর সময় ক্লাশের ভিতরে থাকা দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে শিক্ষকরা গিয়ে আফসানাকে উদ্ধার করে। পরে আফসানাকে ধামরাই সরকারী হাসপাতলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির সভাপতি মিজানুর রহমান, সদস্য নজরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আল ইমরানসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এই বিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) মোঃ তৈমুর রহমান বলেন, এই ভাবে বহিরাগত লোক এসে স্কুল ভাঙচুর করা ঠিক করে নাই। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





